মহা আড়ম্বরে উদ্বোধন চলচ্চিত্র উৎসবের, মধ্যমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

৩০তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

জৌলুস অটুট। ধনধান্যে অডিটোরিয়ামে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন হল ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। গোটা অনুষ্ঠানের পৌরোহিত্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে মঞ্চে উজ্জ্বল ছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছিলেন অভিনেতা দেবও। বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন পাবলো জাস্টিনো সিজার। মঞ্চে বিদেশি অতিথিরাও ছিলেন চোখে পড়ার মতো। সকলকে সঙ্গে নিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

দেখতে দেখতে ২৯ বছর পেরিয়ে ৩০ বছরে পা দিল আন্তর্জাতিক এই চলচ্চিত্র উৎসব। ২০১১ সালে সরকারে এসে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবকে নতুনভাবে সাজিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুষ্টিমেয় কয়েকজন দর্শক নয়, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পড়ে উৎসব হয়ে উঠেছিল আম জনতার। বলিউডের তারকাদের উপস্থিতি, বাংলা ছবিকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র উৎসবকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এবারে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পরিবর্তে ধনধান্যে অডিটোরিয়ামে উৎসবের উদ্বোধন হলেও ধারে ও ভারে বিগত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কোনও অংশে কম ছিল না এবারের উৎসব।

আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে যিশু সেনগুপ্ত এবং জুন মালিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা গানে নৃত্য পরিবেশনা করে উদ্বোধনের মূল সুরটি বেঁধে দিলেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনায় নচিকেতা চক্রবর্তীর কণ্ঠে শোনা গেল, আন্তর্জাতিক কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের থিম সং।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিল তারকার মেলা। বড় ও ছোট পর্দার এক ঝাঁক তারকা হাজির হয়েছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের মঞ্চে পাওয়া গেল, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দে, সব্যসাচী চক্রবর্তী, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, শতাব্দী রায়, পাওলি দাম, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুনমুন সেনকে।

এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা জানালেন রুক্মিণী মৈত্র। উদ্বোধনী ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’সিনেমার কোনও সীমানা নেই। পৃথিবী একটাই দেশ, আমরা সবাই এক। ইতিহাস, ভূগোল, পোশাক, ভাষা হয়ত আলাদা, কিন্তু সিনেমার প্রতি অগাধ ভালবাসা আমাদের একসুতোয় বেঁধে দিয়েছে। অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরাও এখন সিনেমাকে জীবন ও জীবিকা করে নিয়েছেন। তাঁদের প্রতিভা বলিউড, হলিউডকেও হার মানায়। কিন্তু অনেক উঁচুতে পৌঁছতে যে লবির প্রয়োজন হয়, সেটা হয়ত তাঁরা পাচ্ছেন না। কিন্তু আমার বিশ্বাস, আজ যেমন বিশ্বের সিনেমা বাংলায় এসেছে, একদিন বাংলার সিনেমাও বিশ্বের দরবারে জায়গা করে নেবে।’

কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এবারের থিম কান্ট্রি ফ্রান্স। সে দেশের ২০টি ছবি দেখানো হবে। উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হল তপন সিনহার ‘গল্প হলেও সত্যি’। কিংবদন্তি পরিচালকের জন্মশতবর্ষও পালিত হচ্ছে এবারের উৎসবে। বিশেষ শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে মনোজ মিত্র, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, গৌতম হালদারের মতো ব্যক্তিত্বকেও।