চন্ডীর নাম জানেনা এমন পাঠক বোধহয় বাংলায় নেই।সেই সময়ে খবরের কাগজ দেখার এক বিশেষ আগ্রহ ছিল কার্টুন।ব্যংগচিত্রের দিকে তাকিয়ে পাঠক পড়ে নিতেন সংবাদ। আজ আর বাংলা কাগজে সেভাবে কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র চোখে পড়ে না।।সেটা অন্য কথা।কিন্তু বাজার যে আজও আছে তা সকলে জানেন।
চন্ডী লাহিরির জীবনাবসানে থেমে গিয়েছিল চন্ডীপাঠ।টস্টসে ব্যঙ্গচিত্র তির্যক রেখায় তিনিই বাঙ্গালীকে কয়েক দশক ধরে মাতিয়ে রেখেছিলেন.১৮ই জানুয়ারী ৮৬ বছর বয়সে থমকে গেছিল শিল্পীর তির্যক ছবি আঁকার হাত। ১৯৩১ সাল থেকে ২০১৮ এক বর্ণময় জীবনের অধিকারী এই চন্ডী লাহিরী।কার্টুনের নীচে ছোট করে লেখা থাকত চন্ডী।রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা বিষয়কে সরলভাবে ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার এক অনবদ্য কারিগ্ র ছিলেন তিনি।সেই চন্ডীপাঠ থেমে যাওয়ার প্ র সকলেই একবাক্যে স্বীকার ক্ রেছিলেম এক যুগের অবসান হল।শেষ হল কার্টুনের জমজমাট অধ্যায়।এক সময় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব্ব কাগজ খুলে দেখতেন কার্টুনে তাঁর কি ছবি আঁকা হয়েছে।কতটা ব্যঙ্গ করা হয়েছে। সংবাদ দিয়ে যে কথা বলা যেত না ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে সে ছবি তুলে ধরতেন চন্ডী লাহিড়ী।
চণ্ডী লাহিড়ীর জন্ম ১৯৩১ সালের ১৬ই মার্চ নদীয়ার নবদ্বীপে।ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সংগে ওঠাবসা।সাংবাদিক হিসেবে আবির্ভাব ১৯৫২সাল।বয়স তখন ২১ বছ্র।আর কার্টুন আঁকা ১৯৬০ সাল থেকেই।এরপ্ র থেকেই কল্কাতার নামী দৈনিকে কার্টুন এঁকে গেছেন ক্রমাগত।তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য কার্টুন গ্রন্থ ‘ভিজিট ইন্ডিয়া উইথ চন্ডী’।দেশের বাস্তব অবস্থার প্রতি কটাক্ষ করে যেমন কার্টুন এঁকেছেন সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেও ছাড় দেননি ব্যঙ্গচিত্রের দেওয়াল থেকে। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরও থামেনি চন্ডী লাহিড়ীর আঁকার কলম।রাজ্য সরকারের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রচারেও দেখা পাওয়া গেছে তাঁর আঁকা কার্টুন চিত্র যা আজও অম্লান।
এছাড়াও সিনেমার টাইটেল কার্ডেও তিনি কার্টূন এঁকেছেন।উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল ধন্যিমেয়ে, মৌচাক,স্বয়ংসিদ্ধা,চারমূর্তি প্রভৃতি।এখন অবশ্য থেমে গেছে সেই তির্যক কলম।থেমে গেছে চন্ডীপাঠ ও.১৯৩১ সাল থেকে ২০১৮ এক ব্র্ণময় জীবনের সমাপ্তি ।সমাপ্তিতেই থেমে গেছে চন্ডীপাঠ।কার্টুনের চন্ডীপাঠ।এখন অবশ্য হাজার খুঁজলেও কার্টুনের দেখা পাওয়া যাচ্ছেনা।পাঠকও বঞ্চিত হচ্ছে কার্টুনের রসবোধ থেকে।এখন কার্টুন আসছে না সেভাবে।ফলে সে স্মৃতি আঁকড়েই পাঠকের বেঁচে থাকা।কি আর করা যাবে।