• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের এক অভিনব বর্ণাঢ্য আয়োজন- “নীহারিকা”

সুখ-দুঃখ, ওঠা-পড়ার সন্ধিক্ষণে বিদায় নিল ২০২৮ । সূচনা হলো নতুন স্বপ্ন , নতুন লক্ষ্য ও নতুন কিছু আশা নিয়ে জীবনের এক নব অধ্যায়ের ১লা বৈশাখ ২০২৯ এ।

সুখ-দুঃখ, ওঠা-পড়ার সন্ধিক্ষণে বিদায় নিল ২০২৮ । সূচনা হলো নতুন স্বপ্ন , নতুন লক্ষ্য ও নতুন কিছু আশা নিয়ে জীবনের এক নব অধ্যায়ের ১লা বৈশাখ ২০২৯ এ। জীবনের এই শুভ সূচনা প্রারম্ভে নববর্ষের দিনে এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের অভিনব এক অনুষ্ঠানের সঙ্গী হয়ে খুব সুন্দর ভাবে দিনটা অতিবাহিত হল।

অনুষ্ঠানটি পরিবেশিত হল ক্লাব ভর্দে ভিস্তা, দ্য কন্ডোভিলে,রোজ ব্যাঙ্কোয়েট হলে ১৫-০৪-২০২২ এর এক স্বর্ণালী সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানের নামটিও ভারি মিষ্টি- ” নীহারিকা”।

এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের বর্ণাঢ্য আয়োজন ও জাঁকজমকের উজ্জ্বলতা অনুষ্ঠানের শোভাকে শোভিত করেছে। যতই সন্ধ্যা গড়িয়েছে এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের নীহারিকার একের পর এক চমক মনকে আকৃষ্ট করেছে। মনের সঙ্গে নীহারিকার মাধুরী মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। 

চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নক্ষত্রদের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানকে আরও আলোকিত করেছে। উপস্থিত ছিলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়,পরাণ বন্দোপাধ্যায়,অর্জুন চক্রবর্তী,সাহেব চট্টোপাধ্যায়, কেয়া শেঠ,অনন্যা চট্টোপাধ্যায়,ঋতব্রত ভট্টাচার্য, সুদীপ্তা বন্দোপাধ্যায় প্রমূখ বিশিষ্ট গুণী ব্যক্তিরা এবং এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের ফাউন্ডার,প্রোডিউসার,চেয়ারপার্সন ও এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের নিজস্ব ম্যাগাজিন ইআইপির এডিটার এবং দিনকাল নিউজ পেপারের এ্যাসোসিয়েট এডিটার দীপান্বিতা মজুমদার।

সত্যিই প্রাচীন ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার হার্দিক প্রচেষ্টা ও আধুনিকতার সঙ্গে সাবেকিয়ানার এক অনবদ্য মেলবন্ধন এই অনুষ্ঠানে এক অন্যমাত্রা যোগ করেছে।

চলুন এখন আমি ফিরে যাই সেই স্বর্ণালী সন্ধ্যায়। আর আপনাদের সামনে তুলেধরি আমার দেখা ” নীহারিকার ” বিরল অপূর্ব মুহূর্তগুলোকে শব্দচয়নের মধ্যে দিয়ে।

যাঁর সৃজনশীলতার স্নিগ্ধতায় আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি সেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনস নিজস্ব মিউজিক ভিডিও রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে। সত্যিই এক অনবদ্য মিউজিক ভিডিও।

বাঙালী সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ মঙ্গলদীপ প্রজ্জ্বলন।আমাদের শরীর পঞ্চতত্বের সমষ্টি। এর মধ্যে অন্যতম অগ্নি। অগ্নি জ্ঞানের প্রতীক। জ্ঞান রূপেই সর্বত্র বিরাজমান।পরম আত্মা ও আত্মার উভয়েরই জ্যোতিস্বরূপ প্রদীপ।

প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ আত্মজ্যোতির প্রতীক। সকল বাঁধা বিঘ্ন দূর করে এগিয়ে যাওয়ার পথকে প্রশস্ত করে শুভ সূচনাকে সূচিত করে। ” শুভম করতি কল্যাণ, স্বাস্থ্যমণ সম্পদম। শত্রু বুদ্ধ বিনাশয়, দীপান জ্যোতি নমস্তুতে।”

মন্ত্রধ্বনীতে এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাঙ্গলিক দ্বীপশিখা প্রজ্জ্বলিত হল উপস্থিত বিশিষ্ট গুনী ব্যক্তিদের প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে।

নতুন কিছু সূচনা করার আগে গণপতিকে আবাহন করে, শ্রদ্ধা জানিয়ে শুভকার্য সম্পন্ন করা হয়। তাই এখানে বিনায়ক বন্দনা পরিবেশিত হয়েছে ভারতনাট্যম নৃত্য শিল্পীদের অসাধারণ উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে। এবার অনুষ্ঠানের মূলপর্বে প্রবেশ।

ভারতবর্ষের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু নৃত্যের মধ্যে একটি কত্থক নৃত্য। এই নৃত্যের মধ্য দিয়ে নানা জনপ্রিয় কাহিনী তুলে ধরা হত। উত্তর ভারতে এই নৃত্যের প্রথম সৃষ্টি হয়।

কত্থকের যে নৃত্য পরিবেশিত হয়, সেই নাট্যশাস্ত্র লেখা হয়েছিল প্রাচীন ভারতে। ভাগবত পুরাণে রাধা- কৃষ্ণের যে লীলা উল্লিখিত আছে কত্থক নৃত্যের মাধ্যমে তা পরিবেশিত হত।

এখনও তা সমানভাবে জনপ্রিয় হলেও অনেকটাই লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এক কথায় শাস্ত্রীয় নৃত্যের একটি অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত ধারা কত্থক।

এর প্রতিটি বোল অনবদ্য। এখানে কত্থকের বোল ও সরগমের গাঁটছড়া সাবেকিয়ানা ও আধুনিকতার মেলবন্ধনের প্রতীক। কিন্তু কিভাবে। তাহলে বলি- আধুনিকতার ছোঁয়ায় যখন আচ্ছন্ন গোটা বিশ্ব, তখন অনেক ক্ষেত্রে আধুনিকতা ও পুরোনো সংস্কৃতির মধ্যে আদানপ্রদানের একটা ব্যবধান থেকেই যায়।

এই ব্যবধানের দ্বন্দ্বকে দূরে সরিয়ে দুই দ্বন্দ্বকে একইসূত্রে গেঁথেছে এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনস। এক কথায় মর্ডান ক্লাসিক। ১৯৬০ এর সাজসজ্জাকে এখানে তুলে ধরেছে। যাকে বলে রেট্র লুক।

ছয়জন বঙ্গ ললনা মাধবীলতা মিত্র, শুভনিতা পাল, ডিম্পি ঘোষ, ঈষিকা দত্ত ,মৌবনী সরকার, স্নেহা ঘোষাল কখনও ঘাগরা-চোলিতে কখনও আনারকলিতে রূপের ডালি সাজিয়ে সরগম ও কত্থকের বোলে , সরোদ, সেতার, তবলার তালের মূর্ছনায়, আলোকের ঝর্ণাধারায় নিজেদের দক্ষতার সঙ্গে মেলে ধরেছে Ramp Walk এর মধ্যে দিয়ে।

যা ভারতবর্ষের Ramp Show এর ইতিহাসে এক মাইলফলক। ফ্যাশনের জগতে এক অভিনবত্বের দিক নির্দেশ করেছে।বলা যেতে পারে Ramp Show এর মুকূটে এক নতুন পালক সংযোজিত করল এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনস।

এখানে যে মিউজিকের মধ্যে দিয়ে তাঁরা Ramp Walk করলেন সেই মিউজিকটা এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনসের নিজস্ব কম্পোসড এবং কপিরাইট করা।কোনও ডিজের উপস্থিতি ছিলনা।

বাদ্যকরের উপস্থিতিতে এটা পরিবেশিত হয়েছে। বৈদিক যুগ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চা শুরু। প্রায় ২০০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চা মূলত মন্দিরে যে স্তোত্র পরিবেশিত হত তার থেকেই সৃষ্টি ।

সামবেদে এই সঙ্গীত একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত বিষয় হিসেবে আলোচিত হয়েছে। এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনস সাবেকিয়ানা ও আধুনিকতার মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে প্রাচীন ঐতিহ্য ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে বাঁচিয়ে রাখার এক ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করেছে তা চোখে পড়েছে এই অনুষ্ঠানে।

আবার সেই অসাধারণ রেট্র লুক। ঐ ছজন লাবণ্যময়ী মার্জিত, শালীন ও সুস্মিত পোশাক শাড়িতে, ১৯৬০ এর আভিজাত্য ,সাজসজ্জায় ভূষিত হয়ে স্বনামধন্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের বিখ্যাত ঠুমরি ” জোছনা করেছে আড়ি আসেনা আমার বাড়ি” , বেগমের এই ঠুমরির তালে তালে Ramp Walk এর মধ্যে দিয়ে নিজ নিজ প্রতিভা প্রস্ফুটিত করলেন।

এই অনবদ্য মেলবন্ধন আরও সাফল্যমন্ডিত হয়েছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী ও বাদ্যকরের যুগ্ম দক্ষ পরিবেশনার সংমিশ্রণে। কোনও ডিজে নয়। তাদের নিজস্ব উপস্থিতিতে।

আবার তিনজন বঙ্গ ললনা নিজেদের তুলে ধরলেন জাতীয় সংহতির প্রতীক হিসেবে।আমাদের জাতীয় পতাকাকে পূর্ণ মর্যাদার মধ্যে দিয়ে তিনজন তনয়া অতি নিপুণতার সঙ্গে তাঁদের দক্ষ পরিবেশনার মাধ্যমে জাতীয় পতাকার প্রতীক হয়ে উঠলেন।

সঙ্গে সঙ্গে মন মুগ্ধকর বাঁশির সুরে বেজে উঠল শরীরে শিহরণ জাগান সেই গান- ” সারে জাহাঁ সে আচ্ছা”। সুরের মুর্ছনায় ভেসে গেল রোজ ব্যাঙ্কোয়েট হল। দর্শক বাকরুদ্ধ।

নতুন বছরের আগমনে অনেক প্রত্যাশা ও স্বপ্ন পূরণের প্রতীক্ষায় যেমন থাকি তেমনই অনেকে আমরা অধীর অপেক্ষায় থাকি একটা নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ও ডায়েরী জন্য। কারণ আমাদের নিজের মত একটা দিনলিপির প্রয়োজন।

এনলাইটেন ইন্ডিয়া প্রোডাকশনস তাদের নিজস্ব 2022 এর ইংরেজি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করল ১৪২৯ এর বর্ষবরণের শুভক্ষণে। এই ক্যালেন্ডারের মধ্যেও আছে এক অভিনবত্বের স্পর্শ। এখানেও ধরা দিয়েছে ভারতীয় প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখার এক তীব্র তাগিদ।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমলে অক্ষর ও সংখ্যাকে যে আদলে লেখা হত সেই আকারই ক্যালেন্ডারে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি ক্যালেন্ডারের প্রতিটি পাতায় রয়েছে প্রাচীনত্বের ছাপ ও গন্ধ। এখানে প্রতিটি ছবি খুবই প্রাণবন্ত।

ক্যালেন্ডারের ছবি গুলোতে যে সকল চরিত্র ও বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাঁদের সাজসজ্জার মধ্যে দিয়ে তা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। সেখানে রয়েছে এক সম্ভ্রান্ত সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। এখানে বারোমাসের বারোটা মুখ্য ভারতীয় পার্বণকে তুলে ধরা হয়েছে অসাধারণ সব ছবির মধ্যে দিয়ে।