যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনায় আগাম জামিনের আবেদন করলেন মালয়ালম সিনেমার পরিচালক রঞ্জিত। মঙ্গলবার কেরালা হাইকোর্টে এই আবেদন জানান তিনি।
সম্প্রতি রঞ্জিতের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন টলিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। শ্রীলেখা জানান, ২০০৯ সালে রঞ্জিত কোচির একটি ফ্ল্যাটে তাঁকে ডাকেন এবং তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। এত বছর পর এর্নাকুলাম টাউন থানায় ইমেইল মারফত রঞ্জিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান শ্রীলেখা।
এই অভিযোগের কিছুদিন পরেই বেরোয় বিচারক হেমা কমিটির রিপোর্ট। যাতে উঠে আসে মালয়ালম সিনেমা জগতের মহিলাদের উপর হওয়া যৌন নির্যাতনের নানা ঘটনা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই আগাম জামিনের দাবি রঞ্জিতের, এমনটাই মনে করছেন একাংশ। যদিও রঞ্জিত তাঁর জামিনপত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর মতে, তাঁকে পনেরো বছর পরে ফাঁসানো হচ্ছে।
এই অভিযোগের ফলে তাঁর উপর প্রবল চাপ আসতে থাকায় তিনি কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি জানান, অ্যাকাডেমিরই কিছু লোকজন তাঁকে অপসারণের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিল। এই কারণেই তাঁর নামে এই মিথ্যে অভিযোগ, এমনটাই দাবি রঞ্জিতের।
হেমা কমিটির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, মালয়ালম সিনেমা জগতের মহিলারা বহুদিন ধরে নানা রকমের সমস্যার শিকার। তার মধ্যে যৌন দাবিদাওয়া, যৌন নির্যাতন, লিঙ্গবৈষম্য, কর্মক্ষেত্রে যথাযথ সুরক্ষার অভাব, অপর্যাপ্ত সাধারণ সুযোগ-সুবিধা, পারিশ্রমিকের বৈষম্য ইত্যাদি।
অভিনেত্রীদের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এযাবৎ ৯ জন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, মুকেশ, সিদ্দিকি, জয়সূর্য, এডাভেলা বাবু, মনিয়ান পিল্লাই রাজু; চিত্র পরিচালক ভিকে প্রকাশ, রঞ্জিত, কার্যনির্বাহী প্রযোজক ভিচু এবং নোবল। এরমধ্যে মুকেশ বুধবার পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিজয়ন সরকার সাত সদস্য বিশিষ্ট পুলিশের এক বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছেন। এই দলে ৪ জন মহিলা আইপিএস আধিকারিকও রয়েছেন৷ নির্যাতিতাদের বয়ান নেওয়ার কাজ চলছে। তবে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, এখনও পর্যন্ত একজন নিপীড়ককেও তলব করেনি তদন্তকারী দল।