বিশ্বজিৎ সরকার
সকালের ব্রেকফাস্ট করে সবে দোতলার ঘরে উঠেছে বারিদ, আজ শনিবারতার ছুটির দিন। একটু আয়েসী মেজাজ নিয়ে একটা বই খুলে বসেছিল সে। বইটির কয়েক পাতা সবে পড়া হয়েছে হঠাৎ নিচুতলা থেকে তার স্ত্রী রমা ডাক দিতেই তার মেজাজটা বিগড়ে গেল। অনিচ্ছাসত্ত্বেও সে নিচে এলো। রমা জানে তার স্বামীর মেজাজ। তাই সে কিছুটা মোলায়েম সুরে বলে, বলি শুনছো আজ তো তোমার ছুটির দিন, দীপের একটা চাকরির অ্যাপ্লিকেশন স্কুলের ড্রপবক্সে ফেলে দিয়ে এস না!
—কেন মেল বা রেজিস্ট্রি করে পাঠিয়ে দিক। তাছাড়া ওই বা করছেটা কী? ও তো নিজে যেতে পারে!
—না মেলে দেওয়া যাবে না আর ও যদি যেতে পারতো তাহলে আর তোমাকে এত খোশামোদি করতাম! ও বিএড-এর রেজাল্ট আনতে গেছে ইউনিভার্সিটিতে। কাল যাবে আবার ওর পুরনো কলেজে এক প্রয়োজনে। কাল পর্যন্তই জমা নেবে।
—এতদিন ঘুমোচ্ছিল নাকি? কিছুটা রাগত সুরেই বলে বারিদ।
রমা আরো সুর নামিয়ে বলে, দেখো বড় হয়ে গেলেও আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। রমা আর কথা বাড়ায় না, শুধু আস্তে বলে— তাহলে আমি যাই ঠেঙিয়ে ঠেঙিয়ে। কাজ হয়। গুঁইগুঁই করে বারিদ বলে— বার করে রাখো, দশ মিনিটের মধ্যেই বেরোবো।
বারিদ যাবে শ্যামবাজারের এক স্কুলে। কোন্নগর থেকে তিন নম্বর বাসে আগে সরাসরি চলে যাওয়া যেত শ্যামবাজারে, এখন আর সে দিন নেই। তিন মিনিট অন্তর ছিল সেই বাস, এখন মোট তিনটি বাসে ঠেকেছে। হঠাৎ করে উবে গেল সব, তাদের হাজার কর্মীরাই বা গেল কোথায়! অটোর জন্যে অপেক্ষা করতে করতে সেই ছবিই ভেসে এল তার সামনে। অটো ধরে সে আসবে বালি খাল আর সেখান থেকে শ্যামবাজার।
শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় ঘুরে স্কুলের একটু অদূরে বাস যাবে। কিন্তু পাঁচমাথার একটু আগে বাগবাজার বাটায় নেমে গেল বারিদ। বাগবাজার বাটা থেকে বাগবাজার যাওয়ার রাস্তায় সে বহুদিন যায়নি। সে প্রায় ১৫-২০ বছর আগেকার কথা। এখানে গিরিশ মঞ্চে নাটক যাত্রা দেখতে আসত সে। হেঁটে হেঁটেই যাওয়া যাবে ভেবে পুরনো রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকে।
বেলা বারোটার দুপুর, শীত যায়-যায় করে যায়নি এখনো। ঠাণ্ডা হাওয়ায় বেলা বারোটার সূর্য বেশ ম্রিয়মান। তাই রোদের তেজ মুখ লুকিয়েছে। প্রকৃতির এই সুখদায়ক আবহাওয়ায় হেঁটে যেতে ভালই লাগছিল বারিদের। আজকের ফুটপাত ধরে হেঁটে যেতে যেতে বিপরীত প্রান্তের ফুটপাতের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে পরিবেশটাকে দেখে নিচ্ছিল সে। খেয়াল করে, প্রতিনিয়ত বদলে যাওয়া কলকাতার ছবিটা যেন এখানে কিছুটা থমকে দাঁড়িয়ে, সেভাবে পরিবর্তন তার চোখে পড়ে না। একরকম আত্মপ্রসাদই লাভ করে সে। কলকাতার পুরনো চেহারাটা এখনো দেখতে পেয়ে তার মনে প্রসন্নতা উঁকি মারে। সে আগে লক্ষ্য করেছিল এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাস, কিন্তু তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত বাঙালিয়ানা। পথে যেতে যেতে সেই পুরনো ছবি সে অনুভব করে। মিনিট দশেকের মধ্যে পৌঁছে যায় বাগবাজারের রাস্তায়। রাস্তা ছেড়ে ডান দিকের গলিতে সেই স্কুল। বহুদিন আগে সে একবার এই স্কুলে এসেছিল, কী কারণে সেটা এখন তার মনে নেই। তবে স্কুলের রাস্তাটা তার চেনা। গলিতে ঢোকার মুখেই সে খেয়াল করে অনেকেই যাচ্ছে, কয়েকজনের হাতে লম্বা খাম দেখে বুঝতে পারে তারাও একই পথের সওয়ারি। মিনিট দুয়েকের মধ্যেই স্কুলের সামনে পৌঁছে যেতেই দেখে মেলা মানুষের ভিড়। স্কুল গেটের সামনে ভিড় জমিয়েছে ক্যানডিডেট ও গার্জিয়ানরা। প্রশস্ত গেট খোলা। গেট পেরুতেই বাম দিকে দণ্ডায়মান একজন সিকিউরিটি গার্ড, বয়স পঁয়ত্রিশ ছত্রিশ হবে। একটু পাশেই একফালি বারান্দা, গ্রিল দিয়ে ঘেরা, বারান্দার ভিতরে গ্রিলের সঙ্গে প্রায় সাঁটিয়ে রাখা একটা ড্রপবক্স, সেই ড্রপবক্সে খাম ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা। অদূরে থাকা সে গার্ড কিছুটা রিসেপশনিস্টের কাজে বহাল। প্রয়োজনে সে গাইডও করছে আগত আবেদনকারীদের। কর্তৃপক্ষ এক ঢিলে দুই পাখি মারার কাজটা করিয়ে নিচ্ছে গার্ডকে দিয়ে।
গেটের সামনে কিছুটা খোলা জায়গার উপরে ইতস্তত দাঁড়িয়ে থাকা আগত ক্যানডিডেট ও গার্জিয়ানরা ভিড় জমিয়েছে। এদের কেউ জমা দেবে আবার কেউ জমা দিয়ে সামান্য অবসরের মুহূর্তে চাকরির দুরবস্থা বা দেশের সমস্যা নিয়ে মগ্ন। তবে এই আলোচনায় কারোর চোখে মুখে সেই দুশ্চিন্তার ছাপ লক্ষ করে না বারিদ। পরিবর্তে একপ্রকার আড্ডার মেজাজই সে খেয়াল করে। কিছুক্ষণ সে খোলা জায়গাতেই দাঁড়িয়ে থেকে পরিবেশটা যাচাই করে নেয়। সে দেখে বেশিরভাগ ক্যাণ্ডিডেটই অ্যাপ্লিকেশন ড্রপবক্সে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছে, ফলে ভিড় বেশি জমাট বাঁধতে পারছে না। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে সে অ্যাপ্লিকেশনটা ড্রপবক্সে ফেলে দেয় আর ঠিক তখন তার কানে আসে কথোপকথন। ঘাড় ফিরিয়ে দেখে রক্ষীর সঙ্গে একজন মধ্যবয়সী কথা বলে চলেছে— কী, কেমন বুঝছো?
—কিসের স্যার!
স্যার কথাটা শুনে বারিদের একটু হাসি পেয়ে যায়, এখন স্যার ছাড়া সম্বোধন নেই। কর্পোরেট কালচার কীভাবে সমাজ জীবনে ঢুকে পড়েছে, সেই ভাবনা ভেসে আসে তার মনে। এই কিছুদিন আগে কিছু ছেলে রক্ষাকালীর চাঁদা চাইতে এসে স্যার স্যার করে ডাকাডাকি করায় রমা বেরিয়ে এসে বলেছিল— এখানে কোনও স্যার নেই। সঙ্গে সঙ্গে একজন বলে, ম্যাডাম আপনি তো আছেন! রমা মুখের উপর বলেছিল, না আমি কারোর ম্যাডাম নয়। ছেলেগুলো একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। রমা গেট বন্ধ করতে যায়। তখন একটি বাচ্চা ছেলে বলেছিল, জ্যেঠিমা এপাড়ায় আপনি ও আরো কয়েকটি ঘর চাঁদা দেন বলেই আমাদের আসা। রমা বলেছিল— হ্যাঁ, কিন্তু সেটা তোমাদের ম্যাডাম দেয় না, দেয় এই কাকামী, জ্যেঠিমা। গতবারে আমি ছিলাম না, তোমরা তোমাদের কাকুর কাছে চাঁদা নিয়ে গেছ, রসিদে দেখি লেখা আছে স্যার। এই বলে তাদের এক প্রস্থ জ্ঞান দিয়ে ফেলেছিল রমা— চাঁদা চাইতে গেলে প্রত্যাক বাড়িতে আবার আগের মত নাম জেনে দাদা, কাকু, দাদু সম্বোধন করে যেন চাঁদা চাওয়া হয়, সেই সবকটা শিখিয়ে দিয়েছিল তাদের। প্রহরীর স্যার সম্বোধনে সেই কথাটাই তার মনে পড়ে গেল।
—এই তো চারদিকের হালচাল! তোমার এখানকার অবস্থা, এইসব আর কি!
—আমরা আর কি বুঝবো স্যার, সকাল আটটায় আসি আর রাত আটটায় ফিরি। অন্য কিছু ভাবার দেখার সময় কোথায় স্যার !
—আরে ভাই, চোখের সামনে যা দেখছো সেখান থেকেই বলো না কিছু কথা, যেখান থেকে আমিও কিছু জানতে পারি, শিখতে পারি।
তার বলার মধ্যে আন্তরিকতার সুর। ভদ্রলোকের এই অযাচিত এমন কথা বার্তায় কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। তাই কী বলবে বুঝতে পারে না প্রহরী। প্রহরীর কাছে কোনও উত্তর না পেয়ে একটু থেমে বক্তা বলে, কত অ্যাপ্লিকেশন পড়ল?
—আর বলবেন না স্যার, প্রতিদিনই দু’বস্তা করে হচ্ছে, এই চার দিনে আট বস্তা হয়ে গেছে ।
—পোস্ট তো সবে একটা, এসব দেখে শুনে তোমার কিছু মনে হয় না, রাগ হয়না?
—হয় তো স্যার, আমিই তো ইতিহাসে এমএ, আজ আমাকে এই চাকরি করতে হচ্ছে। একটা পোস্টের জন্য এত এত মানুষের আনাগোনা খারাপ লাগে, কিন্তু কিছু করার নেই।
—কী বল্লে, কিছু করার নেই! একটু জোরে বলে ওঠে আগন্তুক। —এটাই সব চেয়ে বাজে কথা, এটা খুব পরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। সবাই বলে, আমার কিছু করার নেই, আমি একা কী করে করব! প্রত্যেক
ব্যক্তিমানুষের কথা এক সুরে বাঁধা কেন, এটা কখনো ভেবেছেন? সুন্দরবনের ছোট জাগুলিয়া দ্বীপের মানুষটি বলছে, ‘কিছু করার নেই’, আবার চণ্ডীগড়ের সেক্টর ১৭-র স্মার্ট যুবকটিও বলছে ‘কুছ নেহি হোগা’, এই তিনটি শব্দের কী অসাধারণ তালমেল! সবাই বলছে যে কিছু করার নেই! অথচ একদল তো নির্বিচারে সব কিছু করে যাচ্ছে, যার ফলেই তো এই ‘কিছু করার নেই’-এর দীর্ঘশ্বাস। এর পর সুর বদল করে একটু গাঢ় স্বরে বক্তা বলে, শুনুন কিছু করার আছে!
—আমার করার আছে স্যার! আমি সাধারণ দ্বাররক্ষী আমি কী করব!
—তুমি করবে প্রার্থনা!
—প্রার্থনা?
—কিছুক্ষণ আগে সামনের ওই মূর্তির সামনে তুমি মোমবাতি জ্বালিয়ে ভক্তিভরে প্রার্থনা করছিলে, সেই প্রার্থনা। তোমার যদি কিছু করার থাকে না তাহলে তুমি প্রার্থনাই করবে। আজ থেকে প্রার্থনায় বলবে— এই ব্যবস্থার পরিবর্তন হোক। আরাধ্য দেবতার কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা নিবেদন করাটাও একটা কাজ। যেই কাজটা শচীনের মা প্রতিনিয়ত করতেন। শচীন যখন প্র্যাকটিসে যেত তার মা তার জন্য শুধু করতেন প্রার্থনা, কেননা এটা ছাড়া ঘরের বাইরে আর কোনোভাবেই কিছু করতে পারত না। সেই ঐকান্তিক প্রার্থনাটাও কাজ। তুমিও প্রার্থনা করো! প্রার্থনা! প্রার্থনায় একাত্ম হয়ে বলো— এই ব্যবস্থা বদলে যাক। বলেই একটু দ্রুতই চলে যায় লোকটি। তার সামান্য পরে বারিদও, গুটিগুটি পায়ে বেরিয়ে আসে চত্বর থেকে।
২
গলি পেরিয়ে বড় রাস্তায় উঠতে ফুটপাত। বড় রাস্তা না পেরিয়ে ডান দিকে ঘুরে সেই ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকে বারিদ। সেই ফুটপাতে বসেছে লোকাল বইমেলা। খুব বেশি স্টল নেই, এক গলি থেকে আর এক গলি আসতে যতটা পথ, একটাই সারি মোটামুটি ১০০ মিটার হবে। হঠাৎ লক্ষ্য করে সেই বক্তাকে। একটা স্টলে একটা বই কিনে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের পথে। বারিদও তাকে লক্ষ্য করে এগোতে থাকে ফুটপাত ধরে। দুপুর হলেও হঠাৎ করে আবছা মেঘে ঢেকে গেছে আকাশ। শীতের আমেজে কিছুটা গা শিরশির করে। বৃষ্টি এসে পড়তে পারে ভেবে একটু পা চালায় বারিদ। করোনার পর ফুটপাতে কলকাতার সেই ভিড় নেই, কোন যাদুমন্ত্রবলে কলকাতার সেই ফুটপাতের ব্যস্ততার ছবি উধাও। তুলনামূলকভাবে অনেকটাই হালকা হয়ে গেছে উত্তর কলকাতার এই ফুটপাত। একটু এগোতে দেখে ফুটপাতের কিছুটা এবং রাস্তার কিছুটা নিয়ে ম্যারাপ বেঁধে ঘিরে রাখা হয়েছে। চারদিকের চার খুঁটির মাথায় কাপড়ের ছাউনি। ভেতরের মধ্যেকার জায়গাতে কয়েকটি চেয়ার পাতা। বারিদের চার-পাঁচ ফুট সামনে চলেছে সেই বক্তা। ফুটপাতের সেই অস্থায়ী ম্যারাপ ঘেরা জায়গায় মধ্যবয়সের একজনকে তদারকির ঢঙে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। মোটা গোঁফ গাঢ় জুলপি। নাদুস-নুদুস চেহারায় গায়ের কালো রঙে গলার সরু চেন দেহের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেছে। এক লহমায় একটু নেতা গোছের মনে হয়।
এই নেতা লোকের মুখে হঠাৎ একটু জোরেই শোনা যায়— এই বৌদি, সন্ধে বেলায় চলে আসবে এখানে। যার উদ্দেশে বলা সে ‘হ্যাঁ’ বলে হনহনিয়ে ঢুকে যায় গলিতে। সেই বছর বত্রিশের মহিলার বোধহয় পিছনেই বাড়ি, সাংসারিক প্রয়োজনে বেরিয়ে ছিলেন কিছু জিনিস কেনার তাগিদে। অন্তত তাঁর আটপৌরে বেশভূষা এবং হাতের একমুঠোয় ধরা একটা জিনিস থেকে এমন আন্দাজ করা যায়। নেতা গোছের লোকটার এমন কথা শুনে সামনের বক্তা দাড়িয়ে গিয়ে প্রশ্ন করে— ‘কেন গো ভায়া, কী হবে এখানে? পাশাপাশি হাত দুই তিন দুরত্বে দু’জনের অবস্থান, বারিদ ও ফুটপাতের মাঝখান ছেড়ে দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে গেছে বক্তার প্রশ্ন শুনে। ভদ্রলোক কিছুটা নেতা সুলভ ঢঙে বলে— খাওয়া দাওয়া, খাওয়া দাওয়া।
—খাওয়া দাওয়া! তা কী জন্যে গো!
পথচলতি একটা মানুষের এত জানার দরকার কী, রুক্ষ মেজাজে এমনই উত্তর আশা করেছিল বারিদ। কিন্তু নেতা কিছুটা মোলায়েম সুরেই বলে— সরস্বতী পূজো, কাল সরস্বতী পূজো না, ওই প্যান্ডেলে ঠাকুর আসবে আর এখানটা অফিস ঘর, বিকেলের রান্না। অনেক বড় নেতা মন্ত্রী আসবে। তার কথা শেষ হতে না হতেই বক্তা বলে উঠে— কোনও ভাল মানুষ আসবে?
এমনতর প্রশ্ন শুনে বারিদও একটু অবাক হয়।
দেখো কী দক্ষযজ্ঞ বেধে যায় এবার! নেতাবাবু এবার মুখ তুলে তাকালেন তার দিকে, একটু এগিয়ে এলেন, ভাল করে মেপে নিলেন বোধহয়। বারিদের মধ্যে শিহরণ।
এবার নেতাবাবু গলা নামিয়ে বলল— দাদা, ভাল লোক চোখের সামনে কোথায়! আছে হয়ত আড়ালে, এখন এই সব চোর ডাকাত মাফিয়াদের নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের বাস। সব বুঝি, চলতে তো হবে, বাঁচতে তো হবে। কিছু করার নেই দাদা।
এবার দপ করে জ্বলে উঠে বক্তা বলে— কে বলে কিছু করার নেই, জীবন থেকে এই ‘কিছু করার নেই’ কথাটা সরাতে হবে। সবার মুখে এই কথাটা ভাইরাল করা হচ্ছে। এই অবস্থায় থেকে আপনার কিছু করার আছে।
—আমি আর কী করব বলুন। আমার উপরে আছে কাউন্সিলার, নেতা এমএলএ।
নেতাবাবু সহজ ভাবেই বলে— আপনার ভেতরের এই অবরুদ্ধ ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখাটাই আপনার কাজ। আর সম্ভব হলে আপনি আপনার নিজস্ব স্টাইলে ছড়িয়ে দিন এই ভাবনা, যেমন ভাবে আমার কাছে ছড়ালেন। বলেই দ্রুত হেঁটে ঢুকে গেলেন গলির ভিতর। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে তখন। বারিদও গলির ভিতর ঢুকে গেল তার খোঁজে। সেও শিখবে কিছু করার পাঠ।