উপনির্বাচনেও ‘শূন্য’, আত্মসমীক্ষা করুক বামেরা

প্রতীকী চিত্র

উপনির্বাচনেও কাটল না ‘শূন্য’-র গেরো। ৬টি বিধানসভা উপনির্বাচনে সিপিএম যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রইল। সাম্প্রতিক আরজি কর আন্দোলনের সঙ্গে অনেকটাই জুড়ে গিয়েছিল বামেরা। শাসক দল ধারাবাহিক ভাবে অভিযোগ করছিল যে, আর জি কর আন্দোলনে বামেরাই পিছন থেকে মদত জোগাচ্ছে। রাস্তায় নেমে এই আন্দোলন দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন উপনির্বাচনে বামদলের ফলাফল ভাল হবে। কিন্তু কোথায় কী? জেতা তো দূরের কথা যেখানে যেখানে বাম প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সেখানেই তাঁদের অবস্থা শোচনীয় হয়েছে ।

পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে কি ভাবে এবারের উপনির্বাচনে বামেদের আসন কমেছে, ২৪-এর লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার লোকসভার মাদারিহাট আসনে বামেরা পেয়েছিল মাত্র ৪০৪৩টি ভোট। মাদারিহাটে বরাবরই লড়ত আরএসপি। এবার তারাই প্রার্থী দিয়েছে। উপ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে আরএসপি মাত্র ৩৪১২টি ভোট পেয়েছে।

উত্তরবঙ্গে কোচবিহারের সিতাই বিধানসভারও উপ নির্বাচন ছিল। এই আসনে প্রার্থী ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের। সিতাইতে গত লোকসভা ভোটে বামেরা পেয়েছিল ২১৬২টি ভোট। এবার তারা পেয়েছে ৩৩১৯টি ভোট। কংগ্রেসের প্রার্থী হরিহর রায়সিংহ বরং বাম প্রার্থীর চেয়ে অনেক বেশি, ৯১৭৭টি ভোট পেয়েছেন।


সিতাইতে বামেদের হাজার খানেক ভোট বাড়লেও তা কমে গেছে নৈহাটিতে। আরজি করের নির্যাতিতার বাড়ি সোদপুরে। নৈহাটি থেকে সোদপুরের দূরত্বও বেশি নয়। একই জেলা। তা ছাড়া নৈহাটি হল শহর এলাকা। কিন্তু এহেন নৈহাটিতে বামেদের ভোট লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় অনেক কমে গেছে। লোকসভা ভোটে সিপিএম পেয়েছিল ১৪৯২৫টি ভোট। এবার সেখানে সিপিআইএম (লিবারেশন) প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৭৫৯৩টি ভোট। অর্থাৎ লোকসভার তুলনায় অর্ধেক ভোট পেয়েছেন বামেরা।

মেদিনীপুর বিধানসভায় লোকসভা ভোটে বামেদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১১১৮৩। এবারও কমবেশি তাই রয়েছে। সেখানে বামেরা পেয়েছে ১১৮৯২টি ভোট।

হাড়োয়ায় বামেরা প্রার্থীই দেয়নি। তারা কৌশলে আসনটি আইএসএফকে ছেড়ে দিয়েছে। লোকসভা ভোটে হাড়োয়ায় সিপিএম পেয়েছিল ৭৪৭০টি ভোট। এবার আইএসএফ সেখানে পেয়েছে ২৫৬৮৪টি ভোট।

একমাত্র তালডাংরায় সিপিএমের ভোট সামান্য বেড়েছে। লোকসভা ভোটে তালডাংরায় সিপিএম পেয়েছিল ১৬৫২৫টি ভোট। এবার সেখানে তারা প্রায় ২০ হাজার ভোট পেয়েছে। এই ফলাফল দেখে পরিষ্কার আরজি করের ঘটনা, তা নিয়ে আন্দোলন, প্রতিবাদ, অসন্তোষ থেকে তারা কোনও ফায়দা তুলতে পারেনি। সামগ্রিকভাবে বামপন্থীদের কাছে এই ফলাফল যে বেশ নিরাশাজনক তা বলাই যায়। এ নিয়ে আত্মসমীক্ষা করছেন বাম নেতৃত্ব।