প্রতীচী’র জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়ানাের অঙ্গীকার করে তাঁকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন জমি ইস্যু নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক মদতে নােবেলজয়ীর ওপর যে অভিযােগের আঙুল তুলেছে, সেজন্য তিনি বাংলার মানুষের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন।
মমতার তার ‘অমর্তদা’ সমর্থনে আপ্লুত নােবেলজয়ী লিখলেন, ‘ভরসা পেলাম। আপনার উষ্ণতা ছুঁয়ে গেল। আপনার সমর্থনই আমার শক্তির উৎস।’ এইভাবেই ‘বােন’ এবং ‘বন্ধু’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রত্যুত্তরে চিঠি পাঠালেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
অমর্ত্য সেনের এই চিঠি শক্তি জুগিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকেও। সােমবার বােলপুরে গিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে বিশ্বভারতীকে দেওয়া কিছুটা জমি ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। কালীসায়র থেকে শান্তিনিকেতনের উপাসনা মন্দির পর্যন্ত রাস্তার জমি গত বছরই বিশ্বভারতীকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলে প্রায়ই সেই রাস্তা সাধারণের যাতায়াত আটকে দিতে কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ ছিল। এই নিয়ে অমর্ত্য সেনসহ শান্তিনিকেতনের অনেক বাসিন্দাই চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন।
সােমবার বােলপুরে প্রশাসনিক সভায় যাওয়ার আগেই চিঠিতে সই করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কালীসায়র থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তাটি ফিরিয়ে নেবে রাজ্য সরকার। এছাড়াও বিশ্বভারতীর যেখানে পাঁচিল তােলা হয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখেও শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদকে রিপাের্ট দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রবীন্দ্র আবেগ এবং অমর্ত্য সেনের মতাে মনীষীদের অসম্মান করলে রাজ্য সরকার যে সংঘাতে যেতেও পিছপা নন, সেই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার লড়াকু মনােভাবের ভূয়সী প্রশংসা ছিল অমর্ত্য সেনের চিঠিতেও।
চিঠিতেই নােবেলজী লিখেছেন, আপনার ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও আক্রান্ত মানুষের জন্য আপনি সময় বের করেছেন। আপনার শক্তিশালী কণ্ঠ, যা ঘটছে তা নিয়ে আপনার উপলব্ধি আমার কাছে শক্তির উৎসস্বরূপ। বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কে তার পাশে দাঁড়ানােয় মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের প্রশংসার পাশাপাশি তাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন নােলেজয়ী অর্থনীতিবিদ।