• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

ভুলে গিয়েছেন আমি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী, আর আপনি মনোনীত রাজ্যপাল, ধনকড়কে তোপ মমতার

আর রাখঢাক করে নয়, এবার সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়'কে চিঠি দিয়ে জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ পাঁচ পাতার চিঠি মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতির পাঠিয়েছেন রাজভবনে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। (File Photo: Twitter / @jdhankhar1)

আর রাখঢাক করে নয়, এবার সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়’কে চিঠি দিয়ে জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ পাঁচ পাতার চিঠি মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতির পাঠিয়েছেন রাজভবনে। সেখানে রীতিমত বাছাই করা শব্দবন্ধ প্রয়োগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, আপনার শব্দচয়ন অসাংবিধানিক। সেই সঙ্গে আপনার বলার ভঙ্গিও। আপনার মন্তব্য অপমান করেছে আমার অফিসকে। অপমান করেছে আমার মন্ত্রিসভাকে। আপনার নিজেকে বিচার করা উচিত।

মমতা আরও লিখেছেন, আপনি আমার মন্ত্রিসভার পরামর্শকে অগ্রাহ্য করতে পারেন, কিন্তু আম্বেদকরের কথা অগ্রাহ্য করা আপনার উচিত নয়। আপনি মোনীত রাজ্যপাল। আপনি বোধহয় ভুলে গিয়েছে আমি কিন্তু নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। যে রাজ্যের রাজ্যপাল আপনি, সেই রাজ্যের সরকারের প্রতি আক্রমণ করাটাই আপনার কাজ হয়ে উঠেছে।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়’কে লেখা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি নতুন করে পত্র যুদ্ধের ইঙ্গিত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সমালোচনা করে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। প্রায় প্রতিদিন টুইট করে কাঠগড়ায় তুলছে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে সেই সঙ্গে নিশানা বানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।

বুধবারও টুইটারে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাজ্যপাল লিখেছিলেন, গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ভর করে সংবিধান মেনে চলার মধ্য দিয়ে। রাজ্যের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ছিল, ওর সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভলো। উনি খুব লম্বা মানুষ। আমরা ছেট মানুষ। উনি ৮ ফুট আমরা ৫ ফুট। এত ছোট হয়ে অত লম্বা মানুষকে তো মাপাই যাবে না। এরপর পাঁচ পাতার চিঠি পাঠিয়ে রীতিমত রাজ্যপালকে নিশানা বানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে জবাব দিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এই ইস্যুতে কংগ্রেসও মমতার পাশে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা অভিষেক মনু সিংভি টুইট করে রাজ্যপালের কর্তব্য কি হওয়া উচিত তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে।

রেশন থেকে ত্রাণ, করোনার গঠিত অডিট টিম এরকম বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে রাজ্যপাল ধারাবাহিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলছেন। এবার দীর্ঘ পাঁচ পাতার চিঠি লিখে তার জবাব দিলেন মমতা।

কেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে লেখা চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে আনলেন তাও বিষয়টি খোলসা করেছেন তিনি নিজেই। রাজ্যের মানুষের ওপর এর বিচার করার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, যাতে করে আমজনতা সঠিকটা জানতে পারেন এবং তারাই এর বিচার করতে পারেন।

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রাপ্তিস্বীকার করে রাজ্যপাল একটি টুইট করেন। সেই টুইটে তিনি লেখেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি যা তথ্যগতভাবে সাংঘাতিক ভুল এবং সাংবিধানিকভাবে খুবই দুর্বল। রাজ্যের মানুষের জানা দরকার, বাস্তব ছবিটা ঠিক কি।