সিপিএমের অন্দরে অনেকেই বলেন কোন জনসভার জন্য ‘ফিটেস্ট’ বক্তা নন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি । বরং চার দেয়ালের ভিতরে কোন সেমিনারে তিনি বললে তাঁর যা পান্ডিত্য তা রীতিমত একটি ক্লাসের মত হয়ে দাঁড়ায়।
রবিবারসীয় বিগ্রেড থেকে তার সেই ইমেজ থেকে বেরােতে চাইলেও বক্তব্যে মাঝে মাঝে নিজের স্বভাব ফিরিয়ে আনেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক। এদিন তিনি স্লোগান দেন লুঠপাটের নয়, জাতপাতেরও নয়, বাংলায় চাই জনহিতের সরকার।
সভামঞ্চ থেকে বিজেপি-তৃণমূলের আতাঁত নিয়ে সরব হন তিনি। বক্তব্যের শুরুতেই রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘুদের অনুদান নিয়েও প্রশ্ন তােলেন বর্ষীয়ান বাম নেতা।
তাঁর কথায়, সম্প্রতি এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার মােটা অংকের অনুদান দিয়েছে। ভােটের আগেই কেন এই অনুদান দেওয়া হল? আর উন্নয়নের জন্য অনুদান জাতপাত দেখে নয়, সমাজের পিছিয়ে পড়া সমস্ত মানুষের জন্য দেওয়া উচিৎ।
এরপরেই তাঁর হুঙ্কার, এ রাজ্যের সরকারের মনে রাখা উচিৎ সকলকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না। ধর্মের রাজনীতি নিয়ে বলতে গিয়ে কলিযুগের অবতারের কথাও টেনে আনেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক।
তাঁর কথায়, কলিযুগে ঈশ্বরের হিসেবে নিজেদেরকে উল্লেখ করেন যাঁরা, তাঁরা আসলে মানুষের অধিকার হরণ করছেন। তাঁদের হারাতেই হবে।
পাশাপাশি এদিনের ব্রিগেডকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন ইয়েচুরি । তাঁর কথায়, এবারের ব্রিগেড সবদিক থেকেই ঐতিহাসিক। এই ভিড় বুঝিয়ে দিচ্ছে এ রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চাইছে। মানুষের কাছে তৃণমূলের বিকল্প বিজেপি নয়। কারণ একদল দুর্নীতি, লুঠে বিশ্বাসী। আর অন্যদল মানুষ-মানুষে বিভেদ তৈরি করতে ব্যস্ত। তাই এবার বাংলায় পরিবর্তন চাই। এবার এ রাজ্যে তৈরি হবে জনহিতের সরকার।
এরসাথেই তিনি বলেন, আমি দিল্লি থেকে যখন বিগ্রেডে আসছিলাম তখন অনেকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলায় যদি ভােটের ফল ত্রিশঙ্কু হয়, তাহলে আমরা কি করব? বিজেপিকে বড় শত্রু মনে করে তৃণমূলকে সমর্থন করবেন? আমি তাঁকে বলি আমরা কি করব সেটা ভাবতে হবে না। তেমন যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিজেপির কোলে ঝাপিয়ে পড়েছে সরকার গড়ার জন্য।
তিনি আরও যােগ করেন, উনি তাে কতবার দিল্লিতে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, শরিক ছিলেন। এখন বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে কতবার লড়েছেন। খুব ভুল না হলে এটাই করবেন উনি। বক্তব্যের একদম শেষে সকলকে নিজের ভােট দেওয়ার আহ্বান জানান ইয়েচুরি।