• facebook
  • twitter
Monday, 13 January, 2025

এসএসকেএম-এ নিষিদ্ধ স্যালাইন বাজেয়াপ্তের কাজ শুরু

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ সংস্থার নাম উল্লেখ না করলেও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার আরএল স্যালাইনের দিকেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে।

নিজস্ব চিত্র

সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতিদের নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগে তোলপাড় হয়েছে জেলা থেকে রাজ্য। এই হাসপাতালে একজন প্রসূতির আরএল স্যালাইন দেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এরপরই ওই স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যার জেরে ওই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর। রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে এই স্যালাইন ব্যবহারে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার পরই পদক্ষেপ শুরু করেছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। ইতিমধ্যে হাসপাতালে ব্যবহারের জন্য মজুত সমস্ত রিঙ্গার ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইন বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য সমস্ত ওয়ার্ড থেকে এই স্যালাইন এক জায়গায় করা হচ্ছে।

রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে আরএল স্যালাইন ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ অতীতে এই স্যালাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। তা সত্ত্বেও কীভাবে প্রসূতিদের শরীরে এই স্যালাইন ব্যবহারের অনুমতি দিল, তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সত্যিই কি এই স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ থেকেই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে? এইসব বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে ১৩ জন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী কমিটি ইতিমধ্যে মেদিনীর মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। ওই হাসপাতাল থেকে বেশ কিছু স্যালাইন এবং ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ সংস্থার নাম উল্লেখ না করলেও পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার আরএল স্যালাইনের দিকেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। আর এই স্যালাইনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরই রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতাল নিজেদের মতো করে ‘নিষিদ্ধ’ স্যালাইনের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেই মতো এসএসকেএম হাসপাতালও কোন ওয়ার্ডে কত পরিমাণে এই স্যালাইন রয়েছে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করেছে। সেই অনুযায়ী এই হাসপাতালের শিশু, মহিলা সহ অন্যান্য বিভাগ থেকে নিষিদ্ধ স্যালাইনগুলিকে বের করে একজায়গায় স্তূপীকৃত করে বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনার পর আর ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি স্বাস্থ্য দপ্তর। ঘটনার পর ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য তিন প্রসুতিকেও কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁদের রবিবার রাতেই এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই তিনজনকে উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে সিসিইউতে এবং এক জনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।