• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিরাটিতে ধৃত মহিলা আদতে শিশুটির মা, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ২৭ জুন:  গতকাল বিরাটিতে শিশু চুরি রহস্যের জট খুলল রেল পুলিশ। ধৃত মহিলা আসলে ওই শিশুর মা বলে জানা গিয়েছে। তাঁর নাম বাসন্তী দেবী। তিনি বিহারের সিবানের বাসিন্দা। মহিলার কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। কিছুদিন হল তাঁরা সপরিবারে বামনগাছিতে এসে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। গতকাল সকাল ৮টা নাগাদ বিরাটি স্টেশনে ধৃত ওই মহিলার

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ২৭ জুন:  গতকাল বিরাটিতে শিশু চুরি রহস্যের জট খুলল রেল পুলিশ। ধৃত মহিলা আসলে ওই শিশুর মা বলে জানা গিয়েছে। তাঁর নাম বাসন্তী দেবী। তিনি বিহারের সিবানের বাসিন্দা। মহিলার কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। কিছুদিন হল তাঁরা সপরিবারে বামনগাছিতে এসে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। গতকাল সকাল ৮টা নাগাদ বিরাটি স্টেশনে ধৃত ওই মহিলার মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন মহিলাটি বামনগাছি স্টেশন থেকে শিশুটিকে নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন। সেসময় শিশুটি বাজার করা ব্যাগে নয়, তাঁর কোলেই ছিল।

গতকাল গভীর রাতে মহিলার স্বামী রামেশ্বর পান্ডে জিআরপি-র কাছে ফোন করেন। তিনি সব খুলে বলতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তিনি জানান, ধৃত মহিলা তাঁর স্ত্রী এবং শিশুটি তাঁদেরই সন্তান। প্রমাণ হিসেবে রেল পুলিশকে তিনি শিশুর জন্মের পর হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দেখান। রামেশ্বর বলেন, তাঁরা কয়েকমাস আগে উত্তর ২৪ পরগনার বামনগাছিতে এসে বসবাস শুরু করেছেন।

জিআরপি জানিয়েছে, গতকালও শিশুটি তাঁদের কাছেই ছিল। এখন বাচ্চাটিকে শিশু কল্যাণ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার দিন রেল পুলিশ ওই মহিলাকে নিয়ে বামনগাছিতে তাঁর ভাড়া বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, মানসিক সমস্যা থাকায়, তিনি রাস্তা ঠিকভাবে চিনে উঠতে পারেননি। তাঁর বলা ঠিকানাতে বাড়ির খোঁজ করা হলেও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার মহিলার স্বামী রামেশ্বরের দেওয়া ঠিকানা পেয়ে বামনগাছিতে তাঁদের ভাড়া বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। রামেশ্বরের প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

রামেশ্বর বলেন, তাঁর স্ত্রী আদতে ওড়িশার বাসিন্দা। তাঁর কিছু মানসিক ও ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। ট্রেনে মহিলারা তাঁকে যেসব প্রশ্ন করেন, তিনি সেসব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তাঁর কথাও বুঝতে পারেননি অন্যান্য যাত্রীরা। যার ফলে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। পুলিশ উপযুক্ত নথি সহ সব কিছু ক্ষতিয়ে দেখার পর শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বুধবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের শিয়ালদহগামী ডাউন দত্তপুকুর লোকালের একটি মহিলা কামরায় এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। একজন মহিলা একটি বড় টুরিস্ট ব্যাগ এবং একটি শপিং ব্যাগ নিয়ে ওই ট্রেনের মহিলা বগিতে ওঠেন বলে যাত্রীদের অনেকে দাবি করেন। ট্রেনটি বিশরপাড়া স্টেশনের কাছাকাছি আসতেই ওই শপিং ব্যাগ থেকে একটি শিশুর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের নজর পড়ে। তাঁরা লক্ষ্য করেন, একটি শপিং ব্যাগের ভিতর প্রায় বছর খানেকের একটি শিশু জামা কাপড়ে ঢাকা অবস্থায় রয়েছে। সেই ব্যাগের মধ্যে শিশুটিকে উচ্চস্বরে কাঁদতে দেখে মহিলা কামরার ভিতর সমস্ত মহিলারা সজাগ হয়ে ওঠেন।

অন্যান্য মহিলা যাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ শুরু করেন। যে মহিলা ওই ব্যাগটি রেখেছিলেন, তাঁকে নিয়ে নানারকম সন্দেহ দানা বাঁধে। যাত্রীরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। মহিলারা তাঁকে ‘শিশু চোর’ সন্দেহে ঘিরে ধরেন। এরকম অবস্থায় ট্রেনটি বিরাটি স্টেশনে পৌঁছলে প্রতিবাদী মহিলাদের হাত থেকে বাঁচতে অভিযুক্ত মহিলাটি পালানোর চেষ্টা করেন। তখন ওই বগির অন্যান্য যাত্রীরা মহিলাটিকে আটক করে শিশু সহ অভিযুক্ত মহিলাকে বিরাটি স্টেশনে কর্তব্যরত রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, যা খবর রটেছে, তার পুরোটাই গুজব।