সুদূর লন্ডনে থেকেও চোখ থাকবে সর্বদা বাংলার দিকেই, লন্ডনযাত্রার আগে এমনই ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। তাঁর লন্ডন সফরের সময়েও তিনি সর্বক্ষণ সংযোগে থাকবেন, রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে এই অভয়বার্তা দিয়েই শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ ব্রিটেনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গী হয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন তিনি বলেন, ‘সকলে শান্তিতে থাকবেন, ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আমরা কেবল চার-পাঁচদিন এখানে থাকব না, তবে যোগাযোগ সর্বদা থাকবে। কোনো রকম অসুবিধা হলে আমরা দেখে নেব।’
উল্লেখ্য, লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ব্রিটেনযাত্রার সময় প্রায় ১২ ঘণ্টা পিছিয়ে গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে এদিন তিনি আরও বলেন, এই বিপর্যয়ের জেরে গোটা সফরসূচিতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সারা রাত-দিন বিমানযাত্রা করতে হবে, যা কষ্টকর। কলকাতা থেকে প্রথমে দুবাই যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সেখান থেকে লন্ডনের বিমান ধরবেন, নামবেন হিথরোয়। উল্লেখ্য, লন্ডনে সোমবার থেকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি রয়েছে। ওই দিন ভারতীয় হাইকমিশনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। মঙ্গলবার রয়েছে বাণিজ্য সম্মেলন। বুধবার হওয়ার কথা সরকারি স্তরে বাণিজ্য-বৈঠক। আগামী বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, প্রথমে ঠিক ছিল শনিবার সকালের বিমানে ব্রিটেনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু হিথরোয় বিপর্যয়ের পর তা স্থগিত হয়ে যায়। পশ্চিম লন্ডনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লেগে বিদ্যুৎ পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে। তারই জেরে শুক্রবার সারা দিনের জন্য বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকে হিথরোয়। হিথরো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, শুক্রবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট (লন্ডনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী) পর্যন্ত বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকবে। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে তুলনামূলক স্বাভাবিক।
রবিবার সকালে (লন্ডনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল, ভারতীয় সময় অনুযায়ী দুপুর) হিথরোতে নামবে মুখ্যমন্ত্রী মমতার উড়ান। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে নামার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এখন হিথরোতেই নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, যে ক’দিন ব্রিটেন সফরে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই সময়ে সরকার ও প্রশাসনের কাজ সামলানো, সমন্বয় করার বিষয়ে তিনি একটি টাস্কফোর্সও গঠন করে দিয়েছেন। তাতে রেখেছেন ভূমি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার, অর্থসচিব প্রভাত মিশ্র, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিজি রাজীব কুমার এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে। পাশাপাশি পাঁচ জন মন্ত্রীকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা হলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিম।