শিশু সন্তান কোলে নিয়ে স্বামীর বাড়ির সামনে ধর্নায় প্রতিবন্ধী গৃহবধু। অভিযােগ তাকে দীর্ঘদিন শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আড়াই বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয় তিনি। ধর্নায় তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তার বন্ধু বান্ধবী এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। জলপাইগুড়ির বেলাকোবার ঘটনা।
দার্জিলিং জেলার বিধাননগরের তরুণী মামনি রায়ের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল জলপাইগুড়ির বেলাকোবার বাসিন্দা অমৃত রায়ের। মামনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০১৫ সালে তারা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে। বেলাকোবাতেই থাকতেন তারা। অভিযােগ, প্রথম থেকেই বিয়েতে আপত্তি ছিল অমৃতের পরিবারের। প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রায়ই কটুকথা শুনতে হত শ্বশুরবাড়ি থেকে। শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চলত তার ওপর।
২০১৬ সালে সন্তানসম্ভবা হলে তাকে বিধাননগরে বাপের বাড়িতে রেখে আসেন অমৃত। সন্তান হওয়ার পর তাকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লােকেরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। তারপর থেকে বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রা। মাস চারেক পর ফের তাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর তাকে ফেরত আনতে চায়নি স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির লােকেরা। এমনকি সন্তানের দায়িত্বও নিতে অস্বীকার করে অমৃত।
ছােট্ট সন্তানকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন ওই প্রতিবন্ধী গৃহবধূ। এরপর স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হয় গৃহবধু। তার পাশে এসে দাঁড়ায় স্কুলের বন্ধুবান্ধবীরাও। আজ তাদের সঙ্গে নিয়েই প্ল্যাকার্ড হাতে সংসার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বেলাকোবায় শ্বশুরবাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন মামনি। কোলে আড়াই বছরের সন্তান।
ঘটনা জানতে পেরে বাড়ি ছেড়ে চম্পট দেয় অমৃত। তার বাবা, মাও বাড়িতে তালা দিয়ে পালানাের চেষ্টা করে বলে অভিযােগ। তখন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাদের পালাতে বাধা দেয়। কিন্তু চাপে পড়েও পুত্রবধুকে ঘরে ওঠাতে নারাজ শ্বশুর, শাশুড়ি। দু’পক্ষের মধ্যে বচসাও হয়।
শেষ পর্যন্ত এদিন সন্ধে নাগাদ ওই গৃহধুকে তার শ্বশুরবাড়িতে ঢুকিয়ে দেয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও তার বন্ধুবান্ধবীরা। এরপর স্থানীয় বেলাকোবা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে গােটা ঘটনাটি জানানাে হয়। পরবর্তীতে কোনাে সমস্যা তৈরি হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।