‘কেন চুপ সিবিআই?’ স্লোগান তুলে রাজপথে নামছে তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড

আরজি কর কাণ্ডের দ্রুত ন্যায় বিচারের দাবিতে এবং ‘রাম-বাম’ -এর ‘চক্রান্ত’র বিরুদ্ধে পূর্বেই কলকাতার রাজপথে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর সৈন্যবাহিনীতে ছিলেন তৃণমূলের মহিলা সাংসদগণ। এবার ঠিক তার এক মাসের মাথায় ফের শহর কলকাতার রাজপথে প্রতিবাদী মিছিল করবে শাসকদলের মহিলা ব্রিগেড। এই মিছিলের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শনিবার। ভিক্টোরিয়া হাউজ থেকে বিড়লা তারামণ্ডল পর্যন্ত আয়োজিত হবে এই মিছিল। তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেডের কণ্ঠে অনুরণিত হবে, ‘তিলোত্তমার বিচার চাই, কেন চুপ সিবিআই’ -এই স্লোগান। সূত্রের খবর, মিছিলে নেতৃত্বে দেবেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সংগঠনের সভাপতি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

উল্লেখ্য, কেবল কলকাতায় নয়, পাশাপাশি ওই নির্দিষ্ট দিনে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সদস্যরা পদযাত্রা করবেন। এক কথায়, আগামী শনিবার ফের সকল প্রস্তুতি নিয়েই পথে নামছে তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড। সূত্রের খবর, প্রতিবাদী মিছিলের পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে বিশেষ লিফলেট বিলিরও উদ্যোগ নিচ্ছে তৃণমূল। নারী উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কী কী করেছেন, তাই তুলে ধরা হবে ওই লিফলেটে। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের এক মাস পেরিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। কিন্তু, সরাসরি ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তারির সংখ্যা এক, যাকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশই। সেক্ষেত্রে সিবিআই-তৎপরতা নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। এবারও ‘সিবিআই চুপ কেন?’ -এই প্রশ্নই তুলে পথে নামছেন চন্দ্রিমারা।

আরজি কর আবহে রীতিমতো ব্যাকফুটে রয়েছে তৃণমূল। একদিকে রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে পুলিশ প্রশাসন, অন্যদিকে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ গুলির ‘থ্রেট কালচার’ প্রকাশ্যে আসতেই স্বাস্থ্যক্ষেত্র নিয়ে বিবিধ প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। কার্যত জোড়া চাপের মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। এই পরিস্থিতিতে বারংবার তৃণমূল নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ‘রাজনৈতিক বর্ণ না দেখেই তদন্ত হোক, প্রকৃত দোষীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া হোক।’ ক্ষোভ-প্রশমনে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁদের ধরনা-মঞ্চে গিয়ে সাক্ষাৎও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।


পাশাপাশি বসেছেন বৈঠকে, কলকাতা পুলিশ কমিশনার সহ দুই স্বাস্থ্যকর্তার অপসারণের দাবিকেও মেনে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুতরাং, আপাতঃদৃষ্টিতে আরজি কর আবহ তৃণমূলের অন্দরে চাপ সৃষ্টি করলেও তাকে দক্ষতার সঙ্গেই সামলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলীয় নেতৃত্ব। এমনকি কিছুক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর আরজি কর কাণ্ড সংক্রান্ত গৃহীত পদক্ষেপ প্রশংসিতও হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এবার মুখ্যমন্ত্রীর দিকনির্দেশে হেঁটেই রাজপথে নামছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহল বলছে, ভোটের রাজনীতিতে সবসময়ই শাসকদল মহিলাদের পাশে পেয়েছে। আগামী শনিবারের মিছিলে মহিলা-অংশগ্রহণই বাতলে দেবে আরজি কর আবহে মহিলাদের মধ্যে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা ঠিক কতটা বেশি।