অবশেষে বীরভূম তৃণমূলের সমস্ত সংশয় দূর করলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন স্পষ্ট করে দিলেন, বীরভূমে অনুব্রতের নেতৃত্বেই চলবে তৃণমূল। সোমবার কালীঘাটে তৃণমূলের কর্ম সমিতির বৈঠকে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন দলের সকলকে। এরফলে বীরভূমে তৃণমূলের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আর কারও মনে কোনও সংশয় থাকল না।
এদিন মমতা বলেন, ‘কেষ্ট বীরভূমের জেলা সভাপতি। পদাধিকার বলে কোর কমিটি সহ জেলার সমস্ত কমিটির চেয়ারম্যান ও। জেলা সভাপতি কোর কমিটির সাধারণ সদস্য এটা আবার হয় না কি?’ প্রসঙ্গত অনুব্রতের এই দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে যাতে বীরভূম জেলা সংগঠন পরিচালনায় কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য তিনি একটি কোর কমিটি গঠন করেন। জেলায় কী কী কর্মসূচি নেওয়া হবে, তা এই কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে নির্ধারণ করার নির্দেশ দেন।
গত প্রায় দুই বছর ধরে কয়লা পাচার কাণ্ডে জেলবন্দি ছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু দুর্দিনে সবসময় কেষ্টর পাশে থেকেছেন দিদি। তিনি দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকলেও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেষ্টকেই সভাপতি পদে বহাল রেখে দেন। যা অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে হয়নি। এমনি অনুব্রত জেলবন্দি থাকা অবস্থায় তৃণমূল সুপ্রিমো বীরভূমকে বীরের ভূমি বলে দাবি করেন। তিনি আশাবাদী ছিলেন, কেষ্ট বীরের মতোই ফিরে আসবেন। তাঁকে কেউ আটকে রাখতে পারবেন না। অবশেষে নেত্রীর সেই বাণীই সত্য প্রমাণিত হল। এখনও মামলা চললেও জামিনে মুক্ত অনুব্রত।
সোমবার কালীঘাটে তৃণমূলের কর্ম সমিতির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ডাকা হয় রাজ্য নেতা থেকে শুরু করে সংগঠনের সমস্ত জেলার সভাপতিদের। অনুব্রত বীরভূম জেলার সভাপতি। সেই সুবাদে দলের ডাকে তিনিও সোমবার কালীঘাটের বৈঠকে এসে হাজির হন। তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে কেষ্ট বলেন, দিদির সঙ্গে ভাই দেখা করতে যাচ্ছে, এতে বলার কী আছে?
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে জেল থেকে মুক্তি পান অনুব্রত। কিন্তু তিনি বোলপুরে ফিরলে দলে তাঁর ক্ষমতা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। অনুব্রতর পাশাপাশি কাজল শেখের নামও সমানভাবে নেতা কর্মীদের মধ্যে উচ্চারিত হতে থাকে। কোর কমিটি নিয়েও একাধিক বিভ্রান্তি তৈরি হয়। কারণ অনুব্রতকেও কোর কমিটির সদস্য করা হয়। তখনই প্রশ্ন ওঠে, দলের দায়িত্ব এখন কার হাতে? অনুব্রত, নাকি কোর কমিটির হাতে? আজ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলেন।