বন্যার জেরে সর্বস্ব হারিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছে স্নাতকের ছাত্রীর

লাগাতার নিম্নচাপ এবং ডিভিসি–র ছাড়া জলের জেরে প্লাবিত বহু গ্রাম। ভিটেমাটি হারিয়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। পুজোর আগে নিজেদের সর্বস্ব হারিয়ে এখন চরম দুর্ভোগের শিকার সাধারণ মানুষ। নিজেদের বাসস্থান থেকে শুরু করে কষ্ট করে ফলানো ফসল সবকিছুই ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। এই পরিস্থিতির মধ্যে নিজের স্বপ্ন হারাতে বসেছে রাজা নরেন্দ্রলাল উইমেনস কলেজের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষাবিজ্ঞান স্নাতকের ছাত্রী পুতুল মুর্মুর জীবন।

গত শুক্রবার কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে জল প্রবেশ করেছিল পাঁশকুড়া এলাকার বাসিন্দা পুতুল মুর্মুর বাড়িতে। নিজের প্রাণ বাঁচাতে শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টের ব্যাগ নিয়ে কোনওরকমে উঠে এসেছিল গ্রামীণ সড়কের উপরে। কিন্তু প্রাণ বাঁচিয়েও মাথায় হাত পুতুলের। বাড়ির অধিকাংশ আসবাবপত্র ভেসে গিয়েছে বন্যার জলে। এই মুহুর্তে জল নামলেও মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই তাঁর এবং তাঁর পরিবারের।

এই মুহুর্তে তাঁর সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হল তার পড়াশোনা। তৃতীয় সেমিস্টারে ভর্তি হওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে না আছে পুঁজি, না আছে তার পড়াশোনার বই। বন্যার জলে সবকিছুই হারিয়েছে সে।


পুতুল বলেন, ”বাড়িতে বাবা নেই। মায়ের উপার্জনের টাকাতেই চলে তার ও তার ভাইয়ের পড়াশোনা। কিন্তু বন্যার জল এসে তাদের সর্বস্ব খোয়ালাম। ভেঙে গেছে বাড়ির দেওয়াল। জলের স্রোতে চলে গেছে পড়াশোনা বইপত্র।”
এদিকে বন্যা ত্রাণে সরকারি সহায়তায় একটি ত্রিপল প্রাপ্তি হয়েছে তাঁর। কিন্তু তাঁর এই মুহূর্তে সবথেকে চিন্তার বিষয় তার কলেজের অ্যাডমিশন। এই মুহূর্তে সে কীভাবে অ্যাডমিশন নেবেন তা নিয়ে দিশেহারা পুতুল ও তার পরিবার। যদিও পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুজিত রায় তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ও কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।