পুজো কার্নিভালে প্রশাসনের আপ্যায়ন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের নবনিযুক্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপর ক্রমশ বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে রাজ্যপালের। কিন্তু সমস্ত মান অভিমান, ক্ষোভ-তিক্ততা সরিয়ে রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
শ্যামাপুজার দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোতে রাজ্যপালের উপস্থিতি অতীতের যাবতীয় সমীকরণ বদলে রাজ্য ও রাজ্যপালের নতুন সম্পর্কের সূচণা বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।
প্রত্যেক বছর নিজের বাড়িতে কালী পুজোর আয়ােজন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত থাকেন পরিবারের সমস্ত লােকজন। পরিবারের লােকজনের সঙ্গে মিলে পুজোর আয়ােজন করেন খােদ মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত দিন উপােসও করেন তিনি।
এই বছর পুজোয় রাজ্যপালকে নিজের বাড়ির পুজোয় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, মাত্র তিনমাস পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। এরই মধ্যে একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে দোষারােপ করা হােক বা কেন্দ্র থেকে সুরক্ষা চাওয়া, রাজ্য ও রাজ্যপালের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে বিভিন্ন সময়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছিল মুখ্যমন্ত্রী নিমন্ত্রণ করলেও সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে রাজ্যপাল আসবেন কিনা?
কিন্তু সমস্ত জ্বল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবার সন্ধ্যে ৬টা ১০মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সস্ত্রীক উপস্থিত হন রাজ্যপাল। এদিকে রাজ্যপালের বাড়িতে প্রবেশ করতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনের রাস্তাটি ফাকাই রাখা হয়েছিল।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাজ্যপালকে বাড়ি ঘুরিয়ে দেখান। তাঁদের পুজোস্থলেও নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর পুজোতে রাজ্যপালের উপস্থিতি রাজ্য ও রাজ্যপালের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ রাজ্য মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। এদিন নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দারাও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোতে যােগদান করেন।