অন্যদিনের থেকে রবিবার একটু ‘বিশেষ’ ছিল পুলিশ কর্মীদের কাছে। প্রত্যেক দিনের মতো কর্মব্যস্ততার মাঝেও একটু ‘অন্যভাবে’ এই দিনটাকে পালন করলো পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কর্মীরা। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিনটা পালন করল। কারণ রবিবার ছিল ‘পুলিশ দিবস’। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কর্মীরাই ‘পুলিশ দিবস’ পালন করতে পারল। কারণ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির দাবি, একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ‘পুলিশ দিবস’ পালন করা হয়। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পুলিশ দিবস’ ঘোষণা করেন। তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকর্মীরা এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি। রবিবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির ৭৮ টি জেলা ইউনিটেই সাড়ম্বরে পালিত হল ‘পুলিশ দিবস’। প্রত্যেকটি জেলার ইউনিটেই সকাল বেলা প্রথমে পতাকা উত্তোলন, আর তারপর কেক কাটা দিয়ে শুরু।
সারাদিন ধরে প্রভাত ফেরী, বস্ত্র বিতরণ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির, রক্তদান শিবির, ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেট প্রতিযোগিতা, দুস্থ মানুষদের সারাদিন ধরে একটু ‘ভালো’ খাওয়ানো, আঁকা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , বৃক্ষরোপণ কোনটা বাদ ছিল না। উপরি পাওনা হিসেবে পুলিশের ভাষায় যাকে বলে ‘বরাখানা’ অর্থাৎ ছোটখাটো পিকনিক তারও আয়োজন করা হয়েছিল। বলতে গেলে পুলিশদের প্রত্যেকদিন কাজের চাপ, ব্যস্ততা তার মাঝখানে ‘পুলিশ দিবস’ উপলক্ষে রবিবারটাকে একটু ‘অন্যভাবে’ কাটানো। এদিন পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফ থেকে বাঁকুড়ার ‘শান্তির নীড়’ নামে একটি হোমে বস্ত্র বিতরণ করা হয় এবং হোমের বাসিন্দাদের সারা দিনে ‘একটু ভালো’ খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও পুরুলিয়ায় অবস্থিত লোধা এবং খেড়িয়া সম্প্রদায়ের গ্রাম ছররাতেও বস্ত্র বিতরণ করা হয় পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফ থেকে।
এছাড়াও ওই গ্রামের বাসিন্দাদের এই দিন সারাদিন ধরে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও করে কমিটি। লোধা এবং খেড়িয়া সম্প্রদায়ের মানুষগুলির মুখে একটু হাসি দেখতে পাওয়াই ছিল এদিন কমিটির মূল উদ্দেশ্য। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্য রাউত। এদিন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া থেকে শুরু করে ঝাড়গ্রাম, বহরমপুর, শিলিগুড়ি সহ সারা পশ্চিমবঙ্গের যতগুলি পুলিশ লাইন রয়েছে বা পুলিশ কমিশনারেট রয়েছে সর্বত্রই সাড়ম্বরে পালিত হয় ‘পুলিশ দিবস’।
এদিন শুধু পুলিশ কর্মীরাই নন তাঁদের পরিবাররাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন পুলিশ দিবসের অনুষ্ঠানে। কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, আবার কোথাও আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন পুলিশ কর্মীদের পরিবার। শুধু বর্তমানে কর্মরত পুলিশকর্মীরই নন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরাও এদিনের অনুষ্ঠানগুলিতে অংশগ্রহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্য রাউত জানিয়েছেন, ” একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই পুলিশ দিবস পালন করা হয়।। এটা পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কর্মীদের কাছে একটি বড় পাওনা। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির তরফে প্রতিটি জেলায় জেলায় পুলিশ দিবস পালন করা হচ্ছে সাড়ম্বরে, বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে। পুলিশকর্মী, পুলিশ কর্মীদের পরিবার এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পুলিশ দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।”
তবে বলা যেতেই পারে সকল ব্যস্ততার মধ্যে এই পুলিশ দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পুলিশ কর্মীদের মধ্যে একদিনের জন্য হলেও একটা খুশির আমেজ এনে দিয়েছে।