• facebook
  • twitter
Thursday, 5 December, 2024

‘পাখির চোখ’ বিধানসভা নির্বাচন, মমতার নজরে বিভিন্ন দপ্তরের কাজ

বিভিন্ন দপ্তরের কাজের খতিয়ান চেয়ে মমতা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন।

ফাইল চিত্র।

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের রাশ নিজের হাতে রাখার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েও সজাগ থাকতে চাইছেন মমতা। ইতিমধ্যেই তিনি বিভিন্ন দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, যে সব দপ্তরের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে সেই দপ্তরগুলির কাজ নিয়ে বেশি চিন্তিত মমতা। এই দপ্তরগুলির শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কাজের পর্যালোচনা করছেন তিনি।

এই সকল দপ্তরগুলির তালিকায় রয়েছে পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর, কৃষি দপ্তর, সেচ ও জলসম্পদ দপ্তর, পরিবহণ দপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর ইত্যাদি। এই দপ্তরগুলির সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষের যোগাযোগ রয়েছে। সোমবার বিধানসভার অধিবেশন শেষ হওয়ার পর পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায় ও তাঁর দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ আরও অনেকে। এই বৈঠকেই মমতা জানিয়ে দেন, এবার থেকে প্রতি সোমবারই বৈঠক হবে। সোমবারের বৈঠকে প্রতি সপ্তাহের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। কয়েক মাস আগে পরিবহণ দপ্তরের দুই মন্ত্রী ও শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে নবান্নে পর্যালোচনা বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহণ দপ্তরের কাজ পর্যালোচনা করে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছিলেন মমতা।

আরজি করের ঘটনার পর স্বাস্থ্য দপ্তরের উপর বিশেষ নজর দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছিলেন তিনি। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পাশাপাশি একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর প্রতিবাদে অনেক মিছিল, মিটিং, সভা হয়েছে। উঠেছে মমতার পদত্যাগের দাবিও। বর্তমানে সেই প্রতিবাদ অনেকটাই স্তিমিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য দপ্তরকে নিয়ে নাগরিকদের একাংশের ক্ষোভ সামাল দিতে উদ্যোগী মমতা।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে থেকে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকাণ্ড নিয়ে সক্রিয়তা দেখানো শুরু করলেন মমতা। প্রশাসনের কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কমাতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, সাধারণ মানুষ কাজ দেখেন। প্রশাসনের কোনও কাজে গাফিলতি থাকতে তা দ্রুত শুধরে নিতে হবে। তা না হলে প্রভাব পড়বে ভোটবাক্সে। কয়েকদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

গত কয়েকদিনে একাধিকবার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের হাল নিজের হাতে রাখার কথা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা। এবার দলের পাশাপাশি প্রশাসনের রাশও টানতে শুরু করেছেন তিনি। বিভিন্ন দপ্তরের কাজের খতিয়ান চেয়ে মমতা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন।