মেয়াদের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে রাজ্যপাল আনতে চলেছেন ‘অভয়া প্লাস’, ‘দুয়ারে রাজ্যপাল’, ‘জন কি বাত’-এর মতো একাধিক কর্মসূচি

আগামী ২৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ডঃ সি ভি আনন্দ বোসের মেয়াদের দুই বছর উত্তীর্ণ হতে চলেছে। সেই উপলক্ষ্যে তিনি রাজ্যজুড়ে একমাসব্যাপী এক নতুন সৃজনশীল এবং গঠনমূলক নয় দফা কর্মসূচি গ্রহণ করতে চলেছেন। রাজভবনের মিডিয়া সেল-এর এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্টক করে রাজ্যপালের অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি) এমনটাই জানিয়েছেন।

১ নভেম্বর, অর্থাৎ আজ থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘আপনা ভারত – জাগতা বেঙ্গল’। রাজ্যপালের জনসংযোগ নীতির অংশ হিসেবেই এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে মানবপাচার ও নেশাদ্রব্য বিরোধী কার্যকলাপ, নারী উন্নয়ন, শিশুসুরক্ষা, যুব অংশগ্রহণ, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক উদ্যোগের উপর।

কর্মসূচির নটি দফা নিম্নরূপ –


১) ‘ফাইল টু ফিল্ড’ প্রোগ্রাম: রাজ্যের সমস্ত জেলা মিলিয়ে মোট ২৫০টি জায়গা রাজ্যপাল সশরীরে ঘুরে দেখবেন।
২) দুয়ারে রাজ্যপাল: রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রাজ্যপাল যাবেন এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন – বিশেষ করে দুর্দশাগ্রস্ত, হতদরিদ্র, চলচ্ছক্তিরহিত ব্যক্তিরা – তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি বিভিন্ন অনাথ আশ্রম এবং বৃদ্ধাশ্রমেও যাবেন।
৩) ক্যাম্পাসে রাজ্যপাল: রাজ্যপাল রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজ ক্যাম্পাসে যাবেন এবং সেখানকার ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন।
৪) জন কি বাত: রাজ্যপালের সঙ্গে যাঁরাই সরাসরি কথা বলতে চাইবেন, তাঁদের কথাই রাজ্যপাল শুনবেন।
৫) রাজ্যপালের ‘গোল্ডেন গ্রুপ’: সমাজের বিভিন্ন স্তর এবং বিবিধ ক্ষেত্র থেকে উঠে আসা মেধাবী মানুষ, যাঁরা সমাজের সামগ্রিক উন্নতির জন্য অবদান রাখতে ইচ্ছুক, তাঁদের এই ব্যাপারে সুযোগ দেবেন রাজ্যপাল।
৬) রাজ্যপালের আর্থিক বৃত্তি প্রকল্প: এই প্রকল্পে দরিদ্র মেধাবী পড়ুয়াদের আর্থিক বৃত্তি বা স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
৭) রাজ্যপালের পুরষ্কার প্রকল্প: জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির জন্য যাঁরা অবদান রেখেছন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে।
৮) রাজ্যপালের নাগরিক সংযোগ: নানাবিধ উপায়ে এবং প্ল্যাটফর্মে রাজ্যবাসীর সঙ্গে রাজ্যপাল সংযোগস্থাপন করবেন।
৯) অভয়া প্লাস: মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

 

আরজি কর কাণ্ড এবং খবরে উঠে আসা তৎপরবর্তী একাধিক ঘৃণ্য ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে এহেন কর্মসূচি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হলেও এর মধ্যে রাজ্য এবং রাজ্যপালের রাজনৈতিক আদর্শগত সংঘাতের গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা সর্বজনবিদিত। ফলত, এই বিষয় নিয়ে নতুন কোনও জলঘোলা হয় কিনা, সেটাই দেখার।