রেড রোডে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

রেড রোডে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনাবাহিনী, রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্যের একাধিক দফতর এই কুচকাওয়াজে অংশ নেয়।

প্রশংসনীয় কর্মদক্ষতার জন্য এবার রাজ্য পুলিশের চার শীর্ষ আধিকারিককে পুলিশ পদকে সম্মানিত করা হয়। শুধু সরকারি বিভিন্ন দফতর নয়, এদিনের কুচকাওয়াজে স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও সরকারি হাসপাতালের নার্সরাও পা মেলান।

এদিন যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের বিশেষ উপস্থাপনাও ছিল রেড রোডে। অনুষ্ঠাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপ্টার থেকে হয় পুষ্পবৃষ্টি। ‘খেলা হবে’ গানে পা মেলান কচিকাঁচা থেকে খেলোয়াড়রা। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও ওঠে।


এবারের কুচকাওয়াজের বড় চমক ছিল চা-বাগানের শ্রমিকদের অংশগ্রহণ। উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত লোকশিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এদিন শোভাযাত্রায় উপস্থিত হন।

প্রতি বছরের মতো এবছরও স্বাধীনতা দিবসে দিন পুলিশ পদক প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এবার এই পুরস্কার পেলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ, ডিআইজি সিকিউরিটি আভারু রবীন্দ্রনাথ, ডিসি নর্থ ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ওএসডি দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবজ্যোতি দাস। রেড রোডের অনুষ্ঠান থেকে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যান্য বছরের মত এবারও স্বাধীনতা দিবসের দিন রাজভবনে চা চক্রে যোগ দিতে রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা।

এদিন এক্স হ্যান্ডেলে দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান মমতা। তিনি লেখেন, আজ ভারতবর্ষের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। এই পুণ্যভূমিকে চিরতরে স্বাধীন করতে যাঁরা নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ করেছেন, আজকের এই মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁদের সকলকে বিনম্র চিত্তে প্রণাম জানাই। পাশাপাশি, দেশের সকল সহ-নাগরিককে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।

নাম না করে কেন্দ্রের এনডিএ সরকারকেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, যে নীতি-আদর্শকে শিরোধার্য করে দেশের মানুষ, কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতাকে বুকে জড়িয়েছিল তা আজ কিছু সাম্প্রদায়িক এবং কুচক্রী রাজনৈতিক দলের জন্য ভূলুণ্ঠিত। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচ্চতায় অধিষ্ঠান করার কথা ছিল সেখানে স্বৈরাচারী শক্তির নাগপাশে আজ তা সমাধিস্থ।

সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাঘাযতীন বলে গিয়েছেন, ‘আমরা মরব, আমরা মরে দেশের লোককে জাগিয়ে দিয়ে যাব’, আমরা সেই আদর্শকে পাথেয় করে দেশের সার্বভৌমত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে আজীবন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।