নবান্ন অভিযান চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে জখম পুলিশ আধিকারিককে দেখতে হাসপাতালে গেলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। চোখে আধলা ইটের টুকরো লাগে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর। এর জেরে তাঁর চোখের মণি ফেটে গিয়েছিল।
বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে জখম পুলিশ অফিসারের পাশে দাঁড়িয়ে নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে আক্রমণ শানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, নবান্ন অভিযানে একটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া ওই পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব কে নেবে?
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুলিশকর্তার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ (বিদেশে যেতে হলেও) বহন করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই নির্দেশই দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে জখম পুলিশ সার্জেন্ট এবং তাঁর পরিবারকে সেই কথা জানিয়ে এসেছেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা।
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান চলাকালীন পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ হিসেবে ফারলং গেটে ডিউটি করছিলেন দেবাশিস। বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে উড়ে এসেছিল ইট। চোখে লেগে গলগল করে রক্ত ঝড়তে থাকে। আধলা ইটের টুকরোর আঘাতে দেবাশিসবাবুর চোখের মণি ফেটে গিয়েছিল।
সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে রাজ্যের সেরা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় রাতেই বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় দেবাশিসবাবুকে। রাতেই অপারেশন হয় তাঁর। যদিও অপারেশনের ফল খুব একটা সন্তোষজনক নয়।
শুধু দেবাশিসই নন, বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পুলিশকর্মী। পুলিশের দাবি, বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। আনন্দপুর থানার ওসি সুমনকুমার দে সহ বেশ কয়েকজনকে বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে পুলিশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, মঙ্গলবার পুলিশ খুব ভালো কাজ করেছে। ওদের হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। রক্ত ঝড়েছে কিন্তু ওরা নিজেদের সংযত রেখেছিল।
এর আগে ১৪ অগস্ট ‘রাত দখল’ নামের কর্মসূচি চলাকালীনও এক মহিলা কনস্টেবল আহত হন। শম্পা প্রামাণিক নামে ওই মহিলা পুলিশকর্মীর চোখে এবং মুখে আঘাত লাগে। তাঁরও একটি চোখের দৃষ্টি চলে গিয়েছে।