• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ওয়াকিটকি,অতিরিক্ত ৯৬টি ফায়ার স্টেশন,  দুর্গোৎসবে প্রস্তুত দমকল দপ্তর : সুজিত

অনলাইনেই ইস্যু হবে ফায়ার লাইসেন্স, 'যুগান্তকারী পদক্ষেপ'

দুর্গোৎসবে প্রত্যেক বছরের মতো এবারও বাড়তি তৎপরতা দমকল বিভাগের। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে সে সকল বিষয়েই বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস। উৎসবের মরশুমে জনসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সকল প্রস্তুতি নিয়েই ময়দানে নেমেছে দমকল দপ্তর। প্রথমত, সিমবেস ওয়াকিটকি আনা হবে দমকল দপ্তরের তরফ থেকে। সুজিতের ভাষায়, ‘ট্রায়াল রানের জন্য দুর্গাপুজোকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

আপাতত ২০টি সিমবেস ওয়াকিটকি শহর এবং জেলাতে আমরা রাখব।’ দমকল দপ্তরের প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার থেকে কলকাতার প্রত্যেক বড়ো পুজো মণ্ডপগুলিতে পরিদর্শনের কাজ শুরু হবে ডিজির নেতৃত্বে। কলকাতা শহর, শহরতলি এবং জেলায়-জেলায় সতর্কতামূলক শিবিরের আয়োজন করা হবে দমকল দপ্তরের তরফ থেকে। এই শিবিরে আগুন থেকে বাঁচার উপায়গুলি জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা হবে। কলকাতার বুকে আয়োজিত এই শিবিরের সংখ্যা ২৫।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, এই ক্যাম্পগুলি কেবল দুর্গাপুজোতেই নয়, পাশাপাশি কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোতেও চালু থাকবে।  বর্তমানে রাজ্যের মোট ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ১৬২টি। দমকলমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘পুজোর সময়ে আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত ৯৬টি ফায়ার স্টেশন থাকবে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায়।’ পাশাপাশি ৭৫টি নতুন টেন্ডার আসছে পুজোর আগেই, দমকল বিভাগে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন সুজিত বোস। তাছাড়াও দমকল দপ্তরের তরফ থেকে পুজোর সময় রাস্তায় থাকবে ৫০টি নতুন মোটর সাইকেল। পুজো মণ্ডপগুলিতে দুটি করে ফায়ার এস্টিংগুইশার থাকবে। মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘ফায়ার এস্টিংগুইশার যদি কেউ চালাতে না পারেন, তাহলে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’

পাশাপাশি এদিন ছোট ব্যবসায়ীদের জন্যও সুখবর দিয়েছেন মন্ত্রী। ছোট ব্যবসায়ীদের ফায়ার লাইসেন্সের জন্য আর ছুটতে হবে না দপ্তরে, নির্দিষ্ট ব্যবসার সঠিক পরিচয় দিয়ে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমেই তিন বছরের জন্য তাঁদের ফায়ার লাইসেন্স ইস্যু হয়ে যাবে, এমনটাই জানিয়েছেন সুজিত বোস। এক্ষেত্রে হবে না কোনো ইন্সপেকশন বা পরিদর্শন। সুজিত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সারা ভারতে আমরাই প্রথম এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বাস্তবায়ন করছি। ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে, ফায়ার স্টেশন এবং পুজো মণ্ডপগুলিতেও এর ফ্লেক্স লাগানো হবে প্রচারের স্বার্থে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘চা বিক্রেতা থেকে বই-খাতা বিক্রেতা প্রত্যেক ছোট ব্যবসায়ীদের কাছেই অনুরোধ, ফায়ার লাইসেন্স নিয়ে নিন। নিজের জীবনকে সুরক্ষিত করুন।’ এখনই কি বাধ্যতামূলক করা হলো এই ফায়ার লাইসেন্স? এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রচার শুরু হয়েছে সবে। আগামী ছ’মাসে কেমন সাড়া পাওয়া যায় তার বিশ্লেষণ করেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’

পাশাপাশি নতুন দুই ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন হতে চলেছে রাজ্যে। সুজিত বলেন, ‘বোলপুরের দুবরাজপুর এবং আলিপুরের বীরপাড়ায় দুটি ফায়ার স্টেশন তৈরির কাজ শেষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সম্মতি মিললেই সেগুলির উদ্বোধন হবে।’ এছাড়াও সুজিত বোস জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে, কালীঘাট এবং টলিগঞ্জের পুরনো ফায়ার স্টেশন সংস্কারের কাজ চলছে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ এই কাজের সমাপ্তি হবে। দমকলমন্ত্রীর ভাষায়, ‘আমাদের লক্ষ্য ১৬২ থেকে ২০০টি ফায়ার স্টেশনের নির্মাণ। আগামী দেড় বছরে আমরা ২৫টি নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করবো।’ এই তালিকায় থাকতে পারে তারাপীঠ। কারণ তারাপীঠে প্রচুর ভক্ত সমাগম হলেও, এখানে নেই কোনো স্থায়ী ফায়ার স্টেশন। ‘তারাপীঠেও দ্রুত ফায়ার স্টেশন নির্মিত হবে’, এ প্রসঙ্গে আশ্বাস-বাণী দমকলমন্ত্রীর।