নবান্নকে জীবানুমুক্ত করার কাজ চলছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের ওই মহিলা আধিকারিক গাড়ি থেকে নেমে নবান্নে কিভাবে নিজের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নবান্নের করিডোরে তিনি কারোর সঙ্গে কথা বলেছিলেন কিনা। তারপর কার কার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন সব পুঙ্খনাপুঙ্খ জানার জন্য নবান্নের সিসিটিভি ক্যামেরা এখন পুলিশের প্রধান হাতিয়ার।
নবান্নের ঢোকার সময় ওই আধিকারিক ভিআইপি লিফট ব্যবহার করেছিলেন। নবান্নে নিজের অফিস ৫১১ নং রুম থেকে নামার সময় তিনি ঠিক কোন লিফট ব্যবহার করেছিলেন তা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়েছে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য একটি লিফট পুরোপুরি বন্ধ করা হল। এতদিন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ভিভিআইপি লিফট থাকলেও সেই লিফটে অন্য মন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের শীর্ষ কর্তারা ব্যবহার করতেন। বৃহস্পতিবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর অন্য কেউ সেই লিফট ব্যবহার করতে পারবে না।
আসলে করোনা নিয়ে রীতিমতো সতর্ক নবান্ন। ওই আমলার ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও ধরনের শিথিলতা দেখাবে না পুলিশ। কারণ এতদিন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ লিফটে বিভিন্ন সময়ে অন্য ভিআইপিদের ওঠানামা করতে দেখা যেত।
এবার শুধু মুখ্যমন্ত্রীর নবান্নে ওঠা নামার জন্যই একটি লিফট ব্যবহার করা হবে। বাকি সময় ওই লিফট বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে বলে নবান্ন সুত্রে খর। রাজভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। থার্মাল স্কিনিং টেস্টের মেশিন বসানো হয়েছে বলেও খবর।
অন্যদিকে করোনা সতর্কতা সত্ত্বেও ছেলেকে নিয়ে নবান্নে ওই আমলা গিয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদফতরের ওই মহিলা আধিকারিক নবান্নে যে নিজের অফিসে গিয়েছিলেন তা স্পষ্ট। নবান্নের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সেই সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট ওই আমলা গাড়ি নিয়ে নবান্নে গিয়েছিলেন। সোমবার মহাকরণের গিয়েছিলেন। তিনতলার সেই অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই আধিকারিকের কার্যালয়ে আরও তিন জন স্টাফ রয়েছেন। মহাকরণের ছয় নম্বর গেট ছাড়া বাকি সব গেট আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মহাকরণের ক্যান্টিনও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মহাকরণ এবং নবান্নের বিভিন্ন জায়গাজুড়ে এখন আতঙ্কের ছায়া ওই আমলা যে যে ফাইল নিয়ে কাজ করেছেন সেই ফাইল ধরা নিয়েও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে করোনা রুখতে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ তন্তুজ ও বঙ্গশ্রীকে দেড় লক্ষ মাস্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বঙ্গশ্রীর তৈরি মাস্ক চলতি সপ্তাহে এসে যাবে বলে স্বপনবাবু জানিয়েছেন। বঙ্গশ্রীকে পঞ্চাশ হাজার ও তন্তুজকে এক লক্ষ মাস্ক তৈরির কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রী নিজেই তন্তুজের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। তন্তুজের শোরুম থেকেই এই মাস্কগুলি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিন মন্ত্রী কালনা শহর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নিজেই মাস্ক বিলি করেছেন।