এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুর নির্বাচন করাতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই সময় ভােট হলে প্রচারের সুযােগ পাওয়া যাবে না, একথা বলে বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর যুক্তি কলকাতা হাইকোর্টের নিয়ম মেনে ৩০ মার্চের পর মাইকে প্রচার করা যাবে। জয়প্রকাশ মজুমদার এবং শিশির বাজোরিয়া বৈঠকে দু’টি বিষয় তুলে ধরেন।
মুকুল রায়ের যুক্তি, নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘােষণা হওয়ার পর থেকে ২৪ দিন সময় থাকে। এটা কমিশনের বিধি। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের প্রতিলিপিও তুলে ধরেন। বলেন, পরীক্ষার্থীদের সমস্যা করে প্রচার করা যাবে না। এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে ২৭ মার্চ। ভােট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। তাহলে প্রচারের সময় থাকছে ১০ দিন। এত কম দিনে প্রচার করা সম্ভব নয়।
নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে বাইরে বেরিয়ে মুকুল রায় বলেন, ৩০ মার্চ ভােটের নির্ঘণ্ট ঘােষণা হলে ২৪ দিন সময় দিতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনওভাবেই ১২ এপ্রিল ভােটগ্রহণ সম্ভব নয়। আর হাইকোর্টের নির্দেশও মাথায় রাখতে হবে। ২৪ এপ্রিলের আগে কোনও ভােট সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরনির্বাচনকে পাখির চোখ করছে সব রাজনৈতিক দল। রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্ব তৃণমূল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। বিজেপির এদিনের বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, আসন্ন পুর নির্বাচনে পরাজিত হবে বিজেপি। তারা ব্যর্থ হবে জেনে নানান অজুহাত খাড়া করছে গেরুয়া শিবির। এ বিষয়ে তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতা তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শােভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এটা তাে আগেই জানা যে, সাধারণত এপ্রিল মাস নাগাদই পুরভােট হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে বিজেপি এতদিন কী করছিল? ঘুমােচ্ছিল? বলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী।
অপরদিকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের আটটি পুরসভাকে এক ছাতায় এনে বারাকপুর পুরনিগম গঠন করার পথে এগােচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। আর এ নিয়েই রাজনৈতিক টানাপােড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। গােটা শিল্পাঞ্চলে হারবে বলেই কৌশলে ভােট করানাে এড়িয়ে যেতে চাইছে রাজ্য সরকার, অভিযােগ বিজেপির।
যদিও পাল্টা উত্তরে তৃণমূল তরফে বলা হয়েছে, যদি বিজেপির জনসমর্থন থাকে, তাহলে যেসব জায়গায় ভােট হবে, সেখানেও তাে জিতবে। শুধু বারাকপুর নিয়ে ভাবছে কেন? জানা গেছে, কবে কোথায় নির্বাচন হবে এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই রাজ্যের তরফে সবিস্তার জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে কমিশনকে। বারাকপুর পুরনিগম গঠনে বেশ কিছু এলাকা এর মধ্যে জুড়তে পারে। যেমন মােহনপুর, কাউগাছি, জেটিয়া গ্রামপঞ্চায়েত এলাকাও।