করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ২০১৯ সালে শান্তিনিকেতনের আশ্রম এলাকায় সাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ-বিদেশের যে সব মানুষজন শান্তিনিকেতনে আসেন তাঁরা আশ্রম এলাকায় প্রবেশাধিকার পেতেন না।
ইতিমধ্যেই ইউনেস্কো বিশ্বভারতী-শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যময় প্রাঙ্গণ বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে গেলেও, তাঁরা শান্তিনিকেতনের ভিতরে উন্মুক্ত পরিবেশে থাকা স্থাপত্যগুলি চাক্ষুষ করতে পারতেন না। এই প্রাঙ্গণেই রয়েছে শান্তিনিকেতন গৃহ, আম্রকুঞ্জ, কালো বাড়ি, ঘণ্টাতলা, সিংহসদন এবং প্রখ্যাত ভাস্কর্য রামকিঙ্কর বেইজের সুজাতা, গৌতম বুদ্ধ, কলের ডাক, সাঁওতাল পরিবারের মতো জগতজোড়া খ্যাতির শিখরে থাকা ভাস্কর্যগুলি।
বিশ্বভারতীর নব নিযুক্ত উপাচার্য বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ড. প্রবীরকুমার ঘোষ দায়িত্বভার নেওয়ার পরই ২০ মার্চ জানিয়ে দেন যে, শান্তিনিকেতনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণগুলিতে সাধারণের প্রবেশাধিকারে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। যা নিয়ে সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শুক্রবার ২১ মার্চ থেকে শান্তিনিকেতনের ভিতরে অসংখ্য মানুষ ও পর্যটকদের প্রবেশ করতে দেখা যায় ঝিরিঝিরে বৃষ্টি এবং মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও।
এ বিষয়ে নব নিযুক্ত উপাচার্য ড. প্রবীরকুমার ঘোষ জানান, অতীতের বিষয়ে আমাকে কোনও প্রশ্ন করবেন না। এখন থেকে শান্তিনিকেতনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ সকলের জন্যই উন্মুক্ত থাকছে। তবে, শান্তিনিকেতন এলাকায় অযথা ভীড় এবং টোটোর প্রবেশে তাঁরা যে রাশ টানবেন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রবীণ আশ্রমিক অপর্ণা দাস মহাপাত্র উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটাই তো বিশ্বভারতী-শান্তিনিকেতনে। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথও চেয়েছিলেন, তাঁর স্বপ্নের বিশ্বভারতীর দ্বার সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে। সেই দ্বার বন্ধ থাকায় যে দমবন্ধ পরিবেশ তৈরী হয়েছিলো এবার তা কেটে গেল।