নিজস্ব সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ, ২০ জুন: মেঘলা আকাশ। টিপ টিপ বৃষ্টি। সেই অর্থে বর্ষা এখনও দূরে। প্রত্যাশার বৃষ্টি দুয়ারে এলেও চিন্তায় সুন্দরবনের মানুষ। কোটাল আসন্ন। আষাঢ় শ্রাবণ মানেই তো ভরা বর্ষণ। নদী বাঁধ ভাঙ্গার আদর্শ সময়। সুন্দরবনের মানুষের বেঁচে থাকার সমস্যার কথা জানেন সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার বাসিন্দা বিধায়ক সমীর জানা ও কাকদ্বীপের বাসিন্দা বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা। নদী বাঁধ রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সব দফতরে আবেদন। অবশেষে সুরাহা। বিধানসভার ইরিগেশনের স্ট্যান্ডিং কমিটি বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখলেন কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষীপুর , ধানি ও রামনগর।
প্রসঙ্গত, বিধানসভার সেচ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা। এদিন সমীর বাবুর উপস্থিতিতে দুর্বল ও সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ গুলি ঘুরে দেখলেন বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। এ খবর বৃহস্পতিবার বিকেলে দৈনিক স্টেটসম্যানকে জানালেন কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা। কাকদ্বীপের বিধায়ক নিজেও ছিলেন নদী বাঁধ পরিদর্শনে। এ বিষয়ে বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা দৈনিক স্টেটসম্যানকে জানান , স্থায়ী ভাবে ভালো করে নদী বাঁধ তৈরি করতে হলে নদীর তীর সংলগ্ন জমির প্রয়োজন । এই জমি দিতে গ্রামবাসীরা নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন।
কারণ, নদী বাঁধ তৈরি না হলে জনপদ আরো নদী গর্ভে চলে যাবে। ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপের লক্ষীপুর মৌজার আশি শতাংশ জমি হুগলি নদীর গর্ভে চলে গেছে। নদীর চর পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে বেড়েছে। সুন্দরবনের দিকে ভেঙেছে। যেখানে ভাঙছে সেখান দিয়েই বাংলাদেশের জাহাজ চলাচলের চ্যানেল। যা দেখভাল করে কলকাতা বন্দর এখন নাম হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ট্রাস্টি। এই বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ চলাচলের জন্য বোল্ডার ফেললেও নদী বাঁধ তৈরির তো দায়িত্ব নেয় না। এ দায়িত্ব রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে সুন্দরবনের মানুষের জন জীবন বাঁচাতে। আবার হুগলি নদীর অধিকার জল পথ রক্ষা প্রতিবেশি দেশের সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হয় তাদেরই। এই সব কিছু মাথায় রেখেই কারো অসুবিধা না করে বর্ষার আগেই যাতে বাঁধ মেরামতির জন্য কাজ শুরু করা যায় তার চেষ্টা চলছে। স্ট্যান্ডিং কমিটি সব কিছু দেখে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে সুপারিশ করবে। আশা করা যায় দ্রুত কাজ শুরু হবে জানালেন কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা।
জানা গেল, জমি দিতে ইচ্ছুক গ্রামের মানুষকে সরকারের যে ধার্য মূল্য জমির জন্য তা দেওয়া হবে। টাকার বিনিময়েই সরকার জমি নেবে বাঁধের জন্য। গ্রামের মানুষের জমি দিতে এগিয়ে আসাটা বাঁধ তৈরির কাজে গতি আনবে। বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা আরো জানালেন, বিধানসভার ইরিগেশন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যগণ কাকদ্বীপ ছাড়াও সাগর নামখানা পাথরপ্রতিমার নদী বাঁধ গুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখছেন। সুন্দরবনের মানুষ বাঁধ পরিদর্শনে আসা বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের দেখে আশায় বুক বাঁধছে, বাঁধ নিশ্চয়ই হবে। নদী গিলে নেবে না বেঁচে থাকার রশদ জমি জমা ঘর বাড়ি।