আসন্ন উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে অনিশ্চয়তা, প্রার্থী তালিকা নিয়ে জট বামফ্রন্টে

আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন। ভোট হবে সিতাই, মাদারিহাট, তালড্যাংরা, মেদিনীপুর, হাড়োয়া এবং নৈহাটি আসনে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে উপনির্বাচন কমিশন। নির্ঘন্ট ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলির তরফে জোরকদমে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। এদিকে এবারের উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।  এই পরিস্থিতিতে কী কৌশল নিতে চলেছে বামেরা ?  শুক্রবার এই নিয়ে বৈঠকে বসে  বামফ্রন্ট

রাজ্যের আসন্ন উপনির্বাচনে বামেরা কী একই নির্বাচনী বৈতরণী পার করবে, না কংগ্রেসের হাত ধরবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। এর আগের নির্বাচনগুলোতে কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট হয়েছিল। তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন অধীর চৌধুরী। শুক্রবার বামফ্রন্টের বৈঠকে জোট নিয়ে আলোচনা হয়।এবার বঙ্গ কংগ্রেসের তরফ থেকে এখনও জোটের বার্তা পাঠানো হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা করা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাম নেতারাও। তবে ঘটনাপ্রবাহ যা বলছে তাতে রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, আসন্ন উপনির্বাচনে একাই লড়তে চলেছে কংগ্রেস। আর এর পক্ষে মত দিয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্য ও জেলা স্তরের একাধিক নেতা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বরাবরই তৃণমূল-বিরোধী হিসেবে পরিচিত। ফলে সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধে চলার পক্ষে ছিলেন তিনি।  তবে বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার সেই ভার অনেকটাই ছেড়ে দিয়েছেন স্থানীয় স্তরের কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর।  ফলে আসন্ন উপনির্বাচনে সিপিএমের হাত কংগ্রেস ধরবে কিনা তা এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত। শুক্রবারের বামফ্রন্টের বৈঠকে এদিন সব শরিক দলগুলিকে জানানো হয় কংগ্রেসের তরফে জোট-বার্তা না আসায় জোটে উৎসাহ নেই কংগ্রেসের।
অন্যদিকে বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আসন্ন উপনির্বাচনে একটি করে আসনে লড়াই করবে ছোট শরিক দলগুলি। তিনটি আসনে লড়বে পারে সিপিএম। বর্তমানে আইএসএফ-এর সঙ্গেও বামেদের সম্পর্ক প্রায় নেই-ই বলা চলে। এই আবহে উপনির্বাচনকে ঘিরে  জোটের  অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে বামেদের।
সূত্রের খবর, সিপিআইএম লিবারেশনের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে সিপিএম। শুক্রবারের বৈঠকে বিমান বসুর সিদ্ধান্ত নেন , ২০ অক্টোবর ফের বসবে বামফ্রন্টের বৈঠক। বাম ঐক্যের বার্তা দিতে নৈহাটি আসনটি কোনও বাম দলকে ছাড়া যায় কি না তা নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর,  উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির আসনটি লিবারেশনকে ছাড়তে পারে সিপিএম। সিপিআইএম লিবারেশন নৈহাটি আসনে লড়তে ইচ্ছুক। এই নিয়ে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনা করেছে দলের জেলার নেতাদের সঙ্গে। উল্লেখ্য, বাংলায় বামফ্রন্টের জোটে নেই লিবারেশন। এই আবহে নৈহাটি আসনটি লিবারেশনকে ছাড়তে পারে সিপিএম। বামফ্রন্টের পরের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।
গত বিধানসভা ভোটে হাড়োয়া আসনটি আইএসএফকে ছেড়েছিল সিপিএম। এবার সেখানে নাগরিক সমাজের কাউকে নির্দল হিসেবে প্রার্থী করা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য সম্পাদকমন্ডলীর ৬ জন সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।  কোচবিহারের সিতাইয়ে জীবেশ সরকার, মাদারিহাটে জি আলম, নৈহাটির জন্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, হাড়োয়ায় পলাশ দাস, মেদিনীপুরে সুজন চক্রবর্তী এবং বাঁকুড়ার তালড্যাংরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অমিয় পাত্রকে।