রাজ্য-ডিভিসি সংঘাত চূড়ান্ত! ডিভিসির বোর্ড-কমিটি থেকে ইস্তফা রাজ্যের দুই প্রতিনিধির

রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকে দুষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন মমতা। জল ছাড়া নিয়ে রাজ্য-ডিভিসি সংঘাতের মধ্যেই ডিভিসির কমিটি থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুই প্রতিনিধি।

রবিবার রাজ্যের দুই শীর্ষ আধিকারিক ডিভিসির বোর্ড এবং কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন। পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু ডিভিসি বোর্ড থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আর সেচ দফতরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ডিভিসির কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। দু’জনের তাঁদের ইস্তফার চিঠিতে বন্যার জন্য ডিভিসিকে দায়ী করেছেন।

এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, শান্তনু বিদ্যুৎ দফতরের পাশাপাশি তথ্য-সংস্কৃতি দফতরেরও সচিব পদেও। এই তথ্য প্রযুক্তি দফতর সামলান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসিকে পাঠানো চিঠিতে শান্তনু লিখেছেন, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন আওতাধীন বাঁধগুলি থেকে অনিয়ন্ত্রিত জল ছাড়ার বাংলার বৃহৎ অংশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদেই আমি দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের বোর্ড থেকে পদত্যাগ করলাম।


এদিকে ডিভিসির জল ছাড়া ইস্যুতে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে মমতা লিখেছেন, আপনার মন্ত্রী দাবি করেছেন, ডিভিসির নিয়ন্ত্রণ কমিটি-র মাধ্যমে মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ পরিচালিত হয়, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও রয়েছেন। আমি তা মানি না।

মমতার অভিযোগ, মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা আগে নোটিস দিয়ে ন’ঘণ্টা ধরে জল ছেড়েছে ডিভিসি। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের জন্য ওই সময় পর্যাপ্ত ছিল না। বারংবার ডিভিসির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও, জল ছাড়া বন্ধ হয়নি।

প্রসঙ্গত, ডিভিসি নিয়ন্ত্রিত বাঁধ থেকে দিন কয়েক আগে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। যার ফলে রাজ্যে বড় বিপর্যয় ঘটেছে। যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। ডিভিসি জল ছাড়ার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।

প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ডিভিসিকে কাঠগড়ায় তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ডিভিসি প্রায় ৪ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। জীবনে যা কোনও দিন হয়নি। ডিভিসির জলধারণ ক্ষমতা মাত্র ৩৬ শতাংশ। কেন কেন্দ্রীয় সরকার ড্রেজিং করবে না? ডিভিসির জলে কেন বাংলা ডুববে? আমরা কৈফিয়ত চাই।