জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশনে যোগ দিলেন আরও ২ চিকিৎসক

১০ দফা দাবি নিয়ে গত শনিবার ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। আজ অনশনের অষ্টম দিন। ইতিমধ্যেই আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর অনশনের জেরে শারীরিক অবনতির কারণে বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত স্থিতিশীল তিনি। ৬ জন জুনিয়র চিকিৎসক এতদিন ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গতকাল ‘আমরণ অনশনে’ যোগ দেন আরও দুই জুনিয়র চিকিৎসক। জানানো হলো ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স ফ্রন্ট’-এর তরফ থেকে।

‘আমরণ অনশনে’ যোগদানকারী দুই চিকিৎসকের পরিচয় কী?

আমরণ অনশনে এবার যোগদান করছেন শিশুমহল হাসপতালের ইএনটি বিভাগের পিজিটি-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া পরিচয় পণ্ডা। তার সঙ্গে অষ্টম দিনে অনশনে যোগ দিয়েছেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্রী আলোলিকা ঘোড়ুই। তাঁদের সাফ দাবি, যতদিন না পর্যন্ত সরকার তাদের ১০ দফা দাবি মেটাচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।


অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র চিকিৎসক, উত্তরবঙ্গেই ১০ দফা দাবির সমর্থনে সেখানে ‘আমরণ অনশনে’ যোগদান করেছেন।

দিন যত গড়াচ্ছে আন্দোলনের তীব্রতা ততই জোড়ালো হচ্ছে। জনসাধারণও জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে তুলেছেন আওয়াজ। দিন দুই আগেই, জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মানতে হবে এই বিবৃতিতে জনসাধারণের এক পক্ষ মুখ্যমন্ত্রীকে মেল করেন। শুধু মাত্র তাই নয়, অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। অনশনে বসার পরও কেন সরকার সরাসরি কথা বলছেনা জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে, কেন তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হচ্ছেনা, এই অভিযোগ তুলে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকেরা।

সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকার কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় ‘গণ ইস্তফার’ পথে হাঁটেন বিভিন্ন হাসপতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। যা থেকে মনে করা হচ্ছে এভাবেই যদি আন্দোলনের তীব্রতা দিনে দিনে বাড়তে থাকে এবং সিনিয়র চিকিৎসকেরা যদি ‘গণ ইস্তফা’-র পথে হাঁটেন তাহলে ভেঙে পড়তে পারে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো।

তারপরই দেখা যায়, ষষ্ঠীর দিন মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার মেল যায়। জুনিয়র চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্য ভবনে আলোচনায় যোগদানও করেন কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় স্বাস্থ্য ভবন থেকে বেরিয়েই জুনিয়র চিকিৎসকেরা সাফ জানিয়ে দেন আন্দোলন চলবে।

গতকাল, নবমীর সন্ধ্যায় জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ধর্মতলায় ডাক দেওয়া হয় মহা সমাবেশের। নবমীর রাতে ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের সমর্থনে দেখা মিলল উপচে পড়া ভিড়। দুর্গোৎসবের সন্ধ্যায় শহর কলকাতায় দেখা মিলল এক অন্যরকম ছবির। গোটা রাজ্য থেকে শুরু করে দেশ, জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে সবাই। সবার একটাই দাবি , তাঁদের দাবি যেন শীঘ্রই পূরণ করা হয়।