মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু করেছেন। এবার মোট ২৮ লক্ষের মতো পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। টাকা যাতে ঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছয় সেজন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন মমতা। কিন্তু তার মধ্যেই ফের এই প্রকল্পে দুর্নীতির খবর সামনে এলো। যাঁদের ওপর আবাস তালিকা সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এবার তাঁরাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লেন। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভায়। এখানকার দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
এখানে সঞ্জয় বসু এবং বিশ্বজিৎ মিত্র দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি কর্মী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। আবাস যোজনার সমীক্ষার দায়িত্বেও ছিলেন তাঁরা। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রকৃত প্রাপকদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অন্যদের নাম তালিকভুক্ত করেছেন। ঘটনা জানাজানি হতেই পুরসভার এই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এই দুই কর্মীকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা ঘটনার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এরপর বনগাঁর ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) ওই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গিয়েছে, প্রতারিত ওই উপভোক্তারা হলেন জয়া বিশ্বাস এবং রামপ্রসাদ সরকার। এই দুইজন আবাস প্রকল্পের প্রকৃত প্রাপক। অথচ তাঁদের নাম বাদ দিয়ে রাজকুমার এবং রামপ্রসাদ সিংহের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন ওই দুই সরকারি কর্মী। এবিষয়ে সরকারি কর্মী সঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। আবার অন্য আর একজন সরকারি কর্মী বিশ্বজিৎ মিত্রের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি তালিকায় থাকা একজনের নাম বদলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলেছে। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বলেন, ‘আমরা বারবার দুর্নীতির অভিযোগ তুলছি। এই অভিযোগ যে সত্য, সেটাই প্রমাণিত হল।’
এ ব্যাপারে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘পঞ্চায়েত প্রধানরা অভিযোগ করেছিলেন নাম-পদবী পরিবর্তন করে একাধিক দুর্নীতি হচ্ছে। জেলাশাসককে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুজন কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যুক্তদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।’