শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের পরই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল দলের ভাঙ্গন প্রক্রিয়া। মালদার বামনগােলার ছয়টি অঞ্চলের অঞ্চল সভাপতি ইতিমধ্যেই পদত্যাগপত্র জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের কাছে দিয়েছেন।
আর এরপর থেকেই শুরু হয়েছে জেলা জুরে জল্পনা। যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ওরা কোন পদে ছিলেন না নতুন করে জেলা সভাপতি তৈরি করা হচ্ছে। পাল্টা জেলা বিজেপির দাবি সময়ের অপেক্ষা গণপদত্যাগ হারে বাড়বে বিজেপির শক্তি।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। এরই মধ্যে বুধবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। আর এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মালদা জেলার বামনগােলা ব্লকের শুরু হয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাঙণ। ছয়টি অঞ্চল কমিটির সভাপতি সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। গণহারে পদত্যাগের ফলে চাঞ্চ ল্য তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
মালদা জেলার বামনগােলা ব্লকের অঞ্চল গুলি হল বামনগােলা, মদনাবতি, পাকুয়া, জগদ্দলে, চাঁদপুর, গােবিন্দপুর মহেশপুর। শ্যামল মন্ডল অঞ্চল সভাপতি হলাে পাকুয়াহাট। গােবিন্দপুর মর্শেপুর মানিক মাহাতাে, বামন গােলা তফিউর রহমান, সাত্বে হাঁসদা চাঁদপুর জগদ্দলা নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল। মদনাবতী হরিহর প্রসাদ গুপ্ত হঠাৎ করে এই পদত্যাগ নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। পদত্যাগকারীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস করছি অথচ যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে তাদেরকে দলে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে এই এলাকা থেকে আগামী দিনে তৃণমুলের ফল ভালাে হবে না। এরা দলেও থাকবে না দলকে কলুষিত করবে।
পাশাপাশি পদত্যাগকারী শ্যামল মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসেবে আমরা তৃনমূল কংগ্রেস করছি। বিগত দিনে আমরা ব্লক সভাপতিকে দেখেছি তারা আলাপ আলােচনার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেছেন। বর্তমানে যাদেরকে নির্বাচিত করা হয়েছে তারা সবিস্তারে এখনাে পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের ঠিক ভাবে চেনেন না।
আগামী দিনে যে অঞ্চ ল কমিটি গঠন করা হবে আমরা যারা তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক তাদেরকে পুরাে অন্ধ কারে রেখে অঞ্চল কমিটি ব্লক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামী দিনে উড়ে এসে জুড়ে বসা নেতৃত্ব থাকবেন কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিছু ব্যবসায়ী ভিত্তিক মানুষকে নিয়ে যারা দলে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে আগামী দিনে তারা দলে থাকবেন কিনা সন্দেহ আছে তাদেরকে নিয়ে কমিটি গঠন আমরা মানব না। তাদের বিমাতৃসুলভ আচারণ আমরা মানবাে না। বিজেপিতে যােগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন বিজেপিতে যােগদানের কোন বিষয় নেই। আমরা যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক তার হয়ে কাজ করব। আর সেই কারণেই আমরা জেলা সভানেত্রী মৌসুম বেনজির নূরের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছি। যদিও তার সঙ্গে দেখা হয়নি।
জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, যারা পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছে তারা কোনদিনই তৃণমুলের অঞ্চল সভাপতি পদে ছিলেন না। কেউ কেউ যুব হয়ে কাজ করতে গিয়ে বেনিয়ম দুর্নীতি করে এলাকায় বড় বড় অট্টালিকা তৈরি করে নিয়েছে। তারা এলাকায় অনেক বদনাম করেছে। আমাদের কর্মীদের মেম্বারদের মারধর করেছে। এরা চাইছে তাদেরকে অঞ্চল সভাপতি করে উপার্জনের পথ তৈরি করে দিক।
বর্তমানে নতুন করে অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক সভাপতি তৈরি করা হয়েছে। তারা অন্য দল থেকে আসলেও ভালাে কাজ করছে। এরা মানুষকে চমকাচ্ছে। তাই এরা দল থেকে চলে গেলে দলে অনেক ভালাে কাজ হবে। এরা ওই এলাকায় একটা অঞ্চলে পাইনি। এরা মূলত ঠিকাদারি করে। শুভেন্দু অধিকারী মালদা জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন। সেই সময় পুলিশকে দিয়ে এদের কুকর্মগুলাে বন্ধ করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগ করেছে। তাই দলের নির্দেশ রয়েছে কেউ যদি অন্যায় করে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে। এই ভয়ে তারা বসে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
উত্তর মালদার বিজেপির সংসদ খগেন মুমু বলেন, শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা গণহারে পদত্যাগ করবে জেলা তৃণমূলের কর্মীরা । যার ফলে তৃণমূল বলে কিছু থাকবে না। রাজ্যজুড়ে বিজেপির ক্ষমতা বাড়বে। ক্ষমতায় এসে দেখিয়ে দেবে মানুষের জন্য কিভাবে কাজ করছে বিজেপি। ডিসেম্বর মাস শেষ হতেই তৃণমূল কংগ্রেস উঠে যাবে। এই তাে সবে মুসল পর্ব শুরু হয়েছে।