• facebook
  • twitter
Sunday, 27 April, 2025

তৃণমূল নেতাকে গুলি, আতঙ্কিত কাউন্সিলরও

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বাইক পাওয়া গিয়েছে। সেটি দুষ্কৃতীদের কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

প্রতীকী চিত্র।

ফের চলল গুলি। শনিবার রাতে বেলঘরিয়ার উত্তর বাসুদেবপুরে এক তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এর জেরে ওই তৃণমূল নেতা সহ দুই জন জখম হয়েছেন। এই ঘটনায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। বিকাশের উপর হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কামারহাটি পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মলা রাই। তিনি জানিয়েছেন, একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই হামলার ঘটনায় মদতদাতাদের নাম বলবেন।

আক্রান্ত তৃণমূল নেতার নাম বিকাশ সিং। তাঁর বুকে ও পেটে গুলি লেগেছে। বিকাশ ছাড়াও সন্তু দাস নামের আরও এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর কোমরে গুলি লেগেছে৷ বিকাশকে প্রথমে বেলঘরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই গভীর রাতে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অপরদিকে আগরপাড়ার বাসিন্দা সন্তু কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

জানা গিয়েছে, বিকাশ সিং কামারহাটি পৌরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মলা রাই–এর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বিকাশের উপর হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিনিও। নির্মলা জানান, সমাজ বিরোধীরা কোনও দলের হয় না। এই ঘটনায় খড়দহ ও কামারহাটির কয়েকজনের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এর পিছনে কারা মদত দিচ্ছে সেটা আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব। আমি মুখ খুললে আমার উপর হামলা হবে।’ জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে বেলঘরিয়ার টেক্সম্যাকো কারখানায় গিয়েছিলেন বিকাশ৷ সেখানে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

কাজের ফাঁকে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে গিয়েছিলেন এই তৃণমূল নেতা ৷ সেই সময় সন্তু নিজের স্ত্রীকে নিয়ে বেলঘরিয়ার উত্তর বাসুদেবপুরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ওই চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন স্বামী–স্ত্রী। এমন সময় তিন বাইক-আরোহী এসে চায়ের দোকান বসে থাকা তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। বিকাশের বুক ও পেটে দুটি গুলি লেগেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সন্তুও৷ এরপর উসুমপুর বটতলা হয়ে আগরপাড়ার দিকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা৷ তিন দুষ্কৃতীর মুখই হেলমেট দিয়ে ঢাকা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং। তিনি এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের বয়ানও নেওয়া হয়েছে। যদিও ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ। স্থানীয়দের দাবি, রাজনৈতিক কারণেই এই তৃণমূল নেতাকে টার্গেট করা হয়েছে। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তির কারও সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল কি না তা–ও খতিয়ে দেখছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। এই বিষয়ে অনুপম সিং জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা দুই রাউন্ডের বেশি গুলি চালিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বাইক পাওয়া গিয়েছে। সেটি দুষ্কৃতীদের কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।