গাড়ির বেপরোয়া গতিতে লাগাম টানতে এবার আরও কড়া হচ্ছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর। ‘স্পিড ম্যানেজমেন্ট’ নীতি গ্রহণের মাধ্যমে যান চালকদের উদাসীনতায় ইতি টানতে তৎপর সংশ্লিষ্ট দপ্তর। চালকের গাফিলতিতে দুর্ঘটনা ঘটলে অথবা মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট চালকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে, এমনটা ফের স্পষ্ট জানালেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। নয়া নীতির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘কোন সড়কে কত বেগে গাড়ি চালানো উচিত তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব নির্দেশিকা দিয়েছেন। আমাদের মত, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই দুর্ঘটনা কমবে। বাংলা-ই একমাত্র রাজ্য যেখানে স্পিড ম্যানেজমেন্ট নীতি গৃহীত হয়েছে যা কিছুদিনের মধ্যেই কার্যকর হবে।’
তাঁর আরও সংযোজন, ‘গাড়ির বেপরোয়া গতি রুখতে রাজ্য সরকার বিশেষ অ্যাপ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে সরকারি এবং বেসরকারি গাড়ির চালকদের ট্র্যাক করা সম্ভব। চালকরা নিয়মাবলী না মানলে তাঁদের একটি সতর্কবার্তা দেওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’ পরিবহন দপ্তরের লক্ষ্য, রাজ্যে পথ দুর্ঘটনা এবং এর ফলে ক্ষতি ও মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা। মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘২০১৬-র পর থেকে বাংলায় পথ দুর্ঘটনা কমেছে। ভারতের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে কলকাতাতেই সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও, একটি দুর্ঘটনাও কাম্য নয়।’
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ ট্র্যাফিক পুলিশ এবং পরিবহন দপ্তরের উদ্যোগে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল রোড সেফটি উইক’ পালিত হচ্ছে রাজ্য জুড়ে। বুধবার সল্টলেক সিটি সেন্টারে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাবনা ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ যুক্ত হয়েছিল পথ নিরাপত্তার সঙ্গে। সেই ভাবনাকে সামনে রেখেই রাজ্য জুড়ে চলছে বিশেষ সচেতনতা অভিযান। পরিবহনমন্ত্রী ছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বোস, সাংসদ দীপক অধিকারী, পরিবহন দপ্তরের সচিব সৌমিত্র মোহন, বিধাননগরের সিপি মুকেশ কুমার, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী-সহ রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।
উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ২০জন সাইকেল আরোহী র্যালি করে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাবেন পথ নিরাপত্তার বার্তা নিয়ে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং নির্দিষ্ট দপ্তর কড়া হলেও, শহর কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় পথ দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সেই বিষয়টি মেনেও নিয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, ‘বর্তমানে বহু উচ্চগতি সম্পন্ন টু-হুইলার বাজারে এসেছে যার প্রতি যুবকরা বেশি আকর্ষিত হন এবং বেপরোয়া গাড়ি চালান বহুক্ষেত্রে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’ এদিনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে দীপক অধিকারী বলেন, ‘বর্তমানে এই ধরনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। যাঁরা পথ নির্দেশিকা মেনে চলেন না, বিশেষ করে যাঁরা হেলমেটটুকু পরেন না তাঁদের পাম্প থেকে পেট্রল দেওয়া উচিত নয়। তবে, অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতার ট্র্যাফিক সুসংবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত।’