• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

করোনা রুখতে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ চিকিৎসাকর্মীরা বাড়ি যাবেন সাত দিন অন্তর

এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসকেরা টানা এক সপ্তাহ কাজ করার পর এক সপ্তাহ বিশ্রাম করতে পারবেন। এই সমস্ত চিকিৎসক কর্মীরা ডিউটি চলাকালীন তাদের সদর দফতরে থাকতে পারবেন।

করোনা রুখতে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ চিকিৎসাকর্মীরা বাড়ি যাবেন সাত দিন অন্তর। (File Photo: IANS)

করোনা যুদ্ধের সৈনিকদের অর্থাৎ যে সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে তাদের শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে ও করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে অভিনব উদ্যোগ নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে এ নিয়ে একটি নোটিশ জারি করা হয়।

এই নোটিশ অনুযায়ী কলকাতা ও তার আশেপাশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বারবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি এবং বাড়ি থেকে হাসপাতলে যাতায়াত করার পরিবর্তে এবার থেকে টানা এক সপ্তাহ হাসপাতালেই নিজেদের ডিউটি পালন করবেন।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে শনিবার আরও একটি নোটিশ জারি করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে রাজ্যে সীমিত পরিমাণে করোনা টেস্ট কিট থাকার জন্য এবং মূল্যবান সম্পদের অপচয় বাঁচাতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ’এর পরামর্শে র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করবে রাজ্য সরকার।

এই পদ্ধতি অনুযায়ী একসঙ্গে একাধিক মানুষের রক্তের নমুনা নিয়ে টেস্ট কিট-এর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। ফলাফল যদি নেগেটিভ আসে তার মানে ওই সকল ব্যক্তিই করোনা নেগেটিভ। বিশেষ করে যে সমস্ত অঞ্চল হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেইসমস্ত অঞ্চলে এই পদ্ধতিতে করোনা সংক্রমনের পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ওই নোটিশে এও জানানো হয় যে করোনার আতঙ্ক এড়ানোর জন্য তৎক্ষণাৎ এই পরীক্ষার ফলাফল জানানো হবে না।

এদিকে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি, প্রথমত বারংবার বাড়ি থেকে যাতায়াতের ফলে সংক্রমনের সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত এর ফলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক ও মানসিক চাপও অনেকটাই বেড়ে যায়। যার দরুন এই সিদ্ধান্ত।

এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসকেরা টানা এক সপ্তাহ কাজ করার পর এক সপ্তাহ বিশ্রাম করতে পারবেন। এইভাবে রোটেশনের ভিত্তিতে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের ডিউটি করবেন। এতে সংক্রমণের ভয় কমবে, আবার তাঁদের শারীরিক ও মানসিক চাপও অনেকটা কমবে।

এই নিয়ে সিএমওএইচএস প্রধানদের সাত দিনের শিফট পদ্ধতির ভিত্তিতে ডিউটি রোস্টার প্রস্তুত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আরও জানানো হয়েছে, এই সমস্ত চিকিৎসক কর্মীরা ডিউটি চলাকালীন তাদের সদর দফতরে থাকতে পারবেন। যদি কোনও কারনে তাঁদের বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন হয় তা হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।

যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ধরা পড়েছে চিকিৎসক মহলে। একদল চিকিৎক মনে করছেন একটানা কাজ করলে শারীরিক ও মানসিক চাপ কমার বদলে উল্টে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফল মারাত্মক হতে পারে।

আবার অন্য দিকে একদল চিকিৎসক এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এইভাবে প্রতিদিন চিকিৎসা কর্মীদের বাড়িতে যাতায়াত বন্ধ করা হলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয় অনেকটাই কমবে এবং তাদের পরিবারের লোকেরাও সুস্থ থাকবেন যা মানসিক স্বস্তির কারণ।