• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

করোনা যোদ্ধাদের কুর্নিশ জানিয়ে ১ জুলাই ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার

কোভিড মোকাবিলায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্যালুট জানিয়ে ১ জুলাই সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হল বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

প্রতীকী ছবি (File Photo: IANS)

১ জুলাই সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। সেই সঙ্গে কোভিড মোকাবিলায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্যালুট জানিয়ে এই ছুটি ঘোষণা করা হল বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্যান্য রাজ্য সরকারের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন ১ জুলাই দিনটিতে ডক্টরস ডে হোক এবং জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

১ জুলাই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিন। এই দিনটি গোটা দেশজুড়ে জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এরাজ্যে অবশ্য এদিনটি তারও আগে থেকে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে যাঁদের অসামান্য অবদান রয়েছে, তাদের ওইদিন রাজ্য সরকারের তরফে বিশেষত চিকিৎসকদের চিকিৎসারত্ন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার করোনার কারণে এবছর ‘চিকিৎসারত্ন পুরস্কার’ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।

পরে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। তবে, করোনা মোকাবিলায় যেসব চিকিৎসকরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন, সেইসব চিকিৎসক, নার্স এবং চিকিৎসাকর্মীদের লড়াইকে স্যালুট জানিয়ে ১ জুলাই সরকারি ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।

সোমবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে জেলায় জেলায় উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌছে দিতে প্রযুক্তির হাত ধরে টেলি মেডিসিন চালু হতে চলেছে। ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিষেবার সূচনা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।

টেলি মেডিসিন চালু হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। কোভিড পরিস্থিতিতে অন্যতম সমস্যা হল ফিজিক্যালি ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন না অনেকে। সেক্ষেত্রে টেলিফোনে অ্যাডভাইস নেওয়া যেতে পারে। এই পরিষেবা আগেও চালু ছিল বাংলায়। তবে, কোভিড সংক্রমণের পরিস্থিতিতে এই পরিষেবাকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গেটা ব্যাপারটা প্রস্তুত করতে কিছুটা সময় লাগবে।

আগামী বুধবার বেলা ১২ থেকে এই পরিষেবা চালু হবে। প্রথমে একটা নম্বর দেওয়া হবে। সেখানে ফোন করে পরামর্শ নিতে পারেন রোগীরা। পরে এই পরিষেবায় জেলাকে যোগ করা হবে। আস্তে আস্তে প্রতিটি জেলার জন্য আলাদা টেলি মেডিসিন ব্যবস্থা চালু হবে। কলকাতার জন্য একটি নম্বর থাকবে। জেলার জন্য থাকবে আলাদা নম্বর।

এর পাশাপাশি খোলা হচ্ছে কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাব। প্রাথমিকভাবে ৬০ জন সদস্য নিয়ে এই ক্লাব শুরু হবে। পরে প্রতিটি জেলায় এমন ক্লাব খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বহরমপুরে ইতিমধ্যে ৬০ জন এই কাজে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের একটা কাউন্সেলিংও হয়েছে। এই ৬০ জনের মধ্যে ১০ জন মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ, ১০ জন মালদা মেডিকেল কলেজ ও ৪০ জন কলকাতায় কাজ করতে রাজি হয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

যারা এই ক্লাবে যুক্ত থেকে কাজ করবেন, তাদের একটা মাসিক বেতন দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ব্যবস্থা করা হবে তাদের থাকা-খাওয়ার। এই মুহূর্তে রাজ্যে কোভিড অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৫,৪০০। সুস্থ হয়ে উঠেছে ১২ হাজার। এই সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষদের একটা বড় অংশকে কাজে লাগানো হবে, অবশ্য যাঁরা যুক্ত হতে চাইবেন।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আজকে হয়তো এর মূল্যায়ন কেউ করতে পারবেন না। একদিন এটার গুরুত্ব অনুধান করতে পারবেন সবাই। এদিন মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন, রাজ্যে ৩ কোটি মাস্ক তৈরি করা হচ্ছে। যা বিনামুল্যে পড়ুয়াদের, ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের, সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের, পুলিশ, দমকল কর্মীদের, পুরসভাগুলি, সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ বহু মানুষকে দেওয়া হবে।

এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলি থেকে বাংলায় ট্রেন এবং আন্তর্জাতিক উড়ান চালানো নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। অবিলম্বে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখার জন্য কেন্দ্রের কাছে তিনি ফের আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে। তবে, রাজ্যের মধ্যে উড়ানে আপত্তি নেই বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করেন।