চতুর্থ দফা নির্বাচনে যে আটটি আসনে ভােটপর্ব মিটলাে,তার মধ্যে বােলপুর লােকসভা কেন্দ্রের অধীনে কেতুগ্রাম,মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা এবং বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের অধীনে থাকা কাটোয়া, কালনা,পুর্বস্থলী উত্তর,পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় ভােট মােটামুটি শান্তিতেই মিটলাে।সেইসাথে বর্ধমান পশ্চিম(দুর্গাপুর)কেন্দ্রের অধীনে মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় বড় ধরনের কোনও গন্ডগােলের খবর মেলেনি। হানাহানি না ঘটায় শাসকদল সহ বিরােধীদলগুলিও একপ্রকার খুশি বলা যায়।তবে নীরব সন্ত্রাসটি সুসংগঠিতভাবে ঘটেছে বলে অভিযােগ।কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছাপ্পা,ইভিএম মেশিন খারাপের খবর মিলেছে। আবার অভিযােগ উঠেছে বিজেপি প্রার্থীকে মারধর সহ গাড়ি ভাঙচুর করার।শাসক শিবিরের পক্ষে অবশ্য সমস্ত অভিযােগ অস্বীকার করা হয়েছে।সােমবার সকালে কেতুগ্রামের খাজি বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সামনেই ছাপ্পা দেওয়ার অভিযােগ উঠে প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে।সাথেসাথেই নির্বাচন কমিশন অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে।ওই দুটি বুথে নতুন প্রিসাইডিং অফিসার নিয়ােগ করা হয়।এদিন কালনা শহরে যােগীপাড়ায় বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাসের উপর হামলার অভিযােগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি প্রার্থীকেও মারধর করা হয়েছে।তার হাতে চোট লেগেছে বলে জানা গেছে।কালনা থানায় এই বিষয়ে লিখিত অভিযােগ জমা পড়ে।যদিও তৃণমুল সমস্ত অভিযােগ অস্বীকার করেছে।মঙ্গলকোটের চকগ্রামে,বনকাপাসিতে ইভিএম বিকল হয় সূচনাতেই। ভােট দিতে আসা ব্যক্তিরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।ভাতারে দলের বেশি বুথে ইভিএম বিকল বলে দেখা যায়।পূর্বস্থলীর পাটুলির ছাব্বিশ নং বুথেও একই অবস্থা।ঘন্টাখানেক পরে অবশ্য ইভিএম পাল্টে দেওয়া হয় বুথগুলিতে।
অপরদিকে মঙ্গলকোটের মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার এক বুথে ইভিএমে তৃণমুল প্রতীকে আতর দেওয়ার অভিযােগ উঠে ভােটকর্মীদের ম্যানেজ করে।এমনকি ভােট দেওয়ার পর বুথের দুশাে মিটারের মধ্যে থাকা শাসকদলের লােকজন।সেই ভােটারের হাতের আঙুলের ঘ্রাণ নিয়ে ভােট তাদের পক্ষে দিয়েছে কিনা তা পরীক্ষানিরীক্ষা চালায় বলে অভিযােগ।মঙ্গলকোটের কামালপুরে বাইশটি পরিবারকে ভােটগ্রহণের আগের দিন ভােট না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।সেইসাথে মঙ্গলকোটের গােতিস্টা,চৈতন্যপুর প্রভৃতি গ্রামের বুথগুলিতে স্বনির্ভর গােষ্ঠীর মহিলাদের ভােটারদের প্রভাবিত করার অভিযােগ উঠেছে।তবে সমস্ত অভিযােগ অস্বীকার করে তৃণমুলের ব্লক নেতৃত্ব জানিয়েছেন,রক্তপাতহীন ভােট হয়েছে,বিরােধীরা শতকরা আশিভাগ বুথে এজেন্ট বসাতেই পারেনি।যদি বলতাে তাহলে আমাদের লােক জোগাড় করে দিতাম।গত পঞ্চায়েত নির্বাচন মঙ্গলকোটের চৈতন্যপুর,গােতিস্টা,পালিগ্রাম,মাঝীগ্রাম প্রভৃতি গ্রামের বুথে গত রবিবার দুপুরের মধ্যে ভােটকর্মী সহ দু’জন করে জওয়ান ঢুকে যান।স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতের তৈরি খাবার তৃণমূলের স্থানীয় বুথ কর্মীরা ভােটকর্মীদের হাতে দেয়।সেটিং ফিটিংস করে যতদূর ম্যানেজ করতে হয় করেছে তারা।প্রতিবাদী ভােটকর্মীদের স্ত্রীর সিথির সিঁদুরের কথা তুলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভােটকর্মী জানিয়েছেন।তাই মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার বুথে ইভিএম মেশিনে তৃণমুল প্রতীকে আতর দেওয়া কিংবা মঙ্গলকোটে প্রায় বুথে খাবার সাপ্লাইকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের শাসকদের হয়ে ভােট করানাের অভিযােগ উঠেছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবার শাসকদলের দায়িত্বে থাকা বুথ এজেন্টদের একসাথে ভোট লুটে বিশেষ সক্রিয়তা চোখে পড়েছে।জানা গেছে,সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ লিখিতভাবে জানিয়েছে বিজেপি।