‘যোগীর হিন্দু ধর্ম চলবে না এই বাংলায়’ সাফ বক্তব্য ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিকের। উল্লেখ্য, ‘সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি’ করছে গেরুয়া শিবির, এই অভিযোগ তৃণমূলের পুরনো। এবার রামনবমীকে কেন্দ্র করে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘ঈদ শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটেছে। আমরা চাই, এবার অন্নপূর্ণা পুজো, রামনবমী-সহ অন্যান্য উৎসবগুলিও শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটুক।’ বিরোধীরা আক্রমণ করে বলেন, ‘সংখ্যালঘু তোষণে ব্যস্ত রাজ্যের শাসকদল।’ তবে বাস্তবেই কি তা-ই? এর প্রেক্ষিতে বিরোধীদের সপাটে জবাব দিলেন সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতি সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সকল ধর্মকে সম্মান করেন বলেই দুর্গাপুজোয় বাংলার ৪২ হাজার পুজো কমিটিকে ৮৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন এবং ঘোষণা করেছেন চলতি বছরের পুজোতে ১ লক্ষ টাকা অনুদান দেবেন। যোগী রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কিন্তু রামের পুজোর জন্য সরকারি অনুদান দেন না! বাংলায় হিন্দু ধর্ম পালনের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য করা হয়, তাহলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চেয়ে বড় হিন্দু আছে?’
এরপরই বাঙালি মনীষীদের আদর্শ মনে করিয়ে দিয়েছেন সাংসদ। তাঁর ভাষায়, ‘মহাপ্রভু চৈতন্য, রামকৃষ্ণদেব এবং বিবেকানন্দের আদর্শ হল নিজের ধর্ম পালনের সঙ্গে অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা করা। এই মতাদর্শই বাংলায় চলে।’ ফের যোগী আদিত্যনাথের দিকে আঙুল তুলে পার্থ বলেন, ‘যোগীর হিন্দু ধর্ম বাংলার বুকে চলবে না, যেখানে অন্য ধর্মের মানুষকে খুন করা হয়, মানুষ অত্যাচারিত হন এবং অন্য ধর্মকে ঘৃণা করা হয়!’ বাংলা যে সম্প্রীতির মাটি, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সাংসদ। তাঁর মতে, ‘মমতা বন্দোপাধ্যায়ের থেকে বড় হিন্দু বাংলায় আর কেউ নেই! আমি হিন্দু ছেলে, আমরা ধর্ম পালন করি বলেই সকালে ঘুম থেকে উঠে বড়মা-র মন্দিরে পুজো দিতে যাই। সেই সঙ্গে অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা করি।’
প্রত্যেকে নিজের ধর্ম পালন করুন, কিন্তু ধর্মের নামে হিংসা বা গুজব ছড়াতে চাইলে সরকার তা বরদাস্ত করবে না। রামনবমীকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘শান্তি বজায় রাখুন। দাঙ্গা করে কেউ কোনও দিন কিছু করতে পারেনি, পারবেও না। গৈরিকীকরণ এবং রক্তিমকরণকে একসঙ্গে মিলিয়ে দেবেন না।’ এই আবহেই এবার সম্প্রীতিতে জোর দিলেন সাংসদ পার্থও।