আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর প্রকাশ্যে এসেছিল তৃণমূলের চিকিৎসক সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাংগঠনিক ব্যর্থতা। তৃণমূলের অন্দরে অভিযোগ উঠেছিল, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক নেতারা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। তাঁরা যথাযথ পদক্ষেপ করলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারকে চাপে পড়তে হত না। শোনা যায়, আরজি কর আন্দোলন চলাকালীন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ভৎর্সনার মুখে পড়েছিলেন তৃণমূলের প্রথম সারির চিকিৎসক নেতারা। সূত্রের খবর, তৃণমূলের হাইকমান্ডের পরামর্শেই চিকিৎসকদের নতুন সংগঠন শুরু হয়। সেই সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাণিজ্যমন্ত্রী তথা পেশায় চিকিৎসক শশী পাঁজাকে। সেই সময় তৈরি হয়েছিল আরও একটি সংগঠন ‘ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ (ডব্লিউবিজেডিএ)। মূলত ‘জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’কে টেক্কা দেওয়ার কথা ভেবেই সরকারপন্থী জুনিয়র ডাক্তাররা এই সংগঠন গড়ে তোলেন। এবার ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর স্বীকৃতি পেল ‘ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’।
শশী পাঁজা ছাড়াও ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর দায়িত্বে রয়েছেন বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো চিকিৎসকেরা। তাঁদের অধীনেই কাজ করবে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএ। এই প্রসঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে ডব্লিউবিজেডিএ জানিয়েছে, ‘ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ এখন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত ও স্বীকৃত। ডব্লিউবিজেডিএ জুনিয়র ডাক্তারদের অধিকার, কল্যাণ ও কাজের পরিবেশ সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তৃণমূল সূত্রে খবর, জুনিয়র ডাক্তারদের এই সংগঠনের মাধ্যমেই রাজ্যের শাসকদল নতুন প্রজন্মের চিকিৎসক নেতৃত্ব তুলে আনতে চাইছে। এই সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সম্প্রতি মৌখিক বিবৃতি দিয়েছেন প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভানেত্রী শশী।
শশী পাঁজা জানান, ইন্টার্ন, হাউস স্টাফ, জুনিয়র চিকিৎসক (প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষ), জুনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক এবং সিনিয়র রেসিডেন্ট (চুক্তিবদ্ধ) ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনে নাম নথিভুক্ত করান। মূল সংগঠনের সাধারণ সদস্য হিসেবে থাকতে পারবেন তাঁরা। আগামী দিনে জুনিয়র ডাক্তারদের এই সংগঠন থেকেই মেডিক্যাল কলেজভিত্তিক পদাধিকারী নিয়োগ করা হবে। ভবিষ্যতে দায়িত্ব বণ্টনে সুবিধা জন্যই জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠনকে অনুমোদন দেওয়া হল। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের লক্ষ্য সর্বস্তরের শাখা সংগঠনকে মজবুত করা। আর সেই জন্যই সিনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকদের এখন থেকেই সংগঠনে যুক্ত করতে চাইছেন শীর্ষ স্তরের নেতারা। এর ফলে পরবর্তী নেতৃত্ব তুলে আনতে যেমন সুবিধা হবে, ঠিক তেমনই রাজ্যজুড়ে দুই সংগঠনও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।