রথের পথে রাজনীতি। উৎসবে লাগল রাজনীতির ছোঁয়া। বৃহস্পতিবার রথের রশি টানতে ময়দানে নামলেন যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ– তৃণমূল এবং বিজেপির শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় স্তরের নেতারা।
জনসংযােগের পাশাপাশি রথ উৎসবকে কেন্দ্র করে তরজা রাজনৈতিক মহলে।
প্রত্যেক বছরের মতাে চলতি বছরেও রথের রশি টেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হুগলির মাহেশ এবং ইসকনের রথযাত্রায় অংশ নেন তিনি। এছাড়াও তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীও এদিন রথযাত্রায় অংশ নেন।
এতদিন পর্যন্ত রথযাত্রায় সেভাবে অংশ নিতে দেখা যায়নি বিজেপিকে। কিন্তু ২০১৯ সালে লােকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘােষণার পর থেকেই রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে দ্রুত, যার প্রভাব পড়েছে রথযাত্রার ওপরেও।
প্রসঙ্গত, বিগত ৩৫ বছরে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি বাম নেতাদের। আদর্শের কারণেই ধর্মীর অনুষ্ঠান বা পুজোর থেকে তাঁরা দূরত্ব বজায় রাখতেন।
কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের বড় পুজোগুলির আয়ােজন থেকে শুরু করে রথযাত্রা, ধর্মীয় উৎসবগুলিতে অগ্রনী ভূমিকা নিতে দেখা দিয়েছে রাজ্য শাসক দলকে।
তবে এবার রাজনৈতিক ময়দানের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসবেও তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দিতে চাইছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার একাধিক জায়গায় রথযাত্রায় যােগ দেন বিজেপির নেতারা।
এদিন এমজি রােডের রামমন্দির থেকে বড়বাজার পর্যন্ত একটি রথযাত্রার আয়ােজন করা হয় গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে। প্রথমে এই রথযাত্রায় মুকুল রায়ের সঙ্গে যােগ দেওয়ার কথা ছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা সুদূর দিল্লি থেকে এই রথে রশি টানতে শহরে আসেন এবং রথযাত্রায় অংশ নেন।
পশ্চিমবঙ্গের রথযাত্রা নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই আগ্রহ হালকাভাবে নিতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। তাঁদের ব্যাখ্যা, উৎসবের মধ্য দিয়ে জনসংযােগ তৈরির ক্ষেত্রেও তৃণমূল নেতাদের টেক্কা দিতে চাইছে তৃণমূল।
শুধু কেন্দ্রীয় নেতারা নন, বৃহস্পতিবার রথের রশি টানতে দেখা গেছে সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতাে রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতাদেরও।
যদিও বিজেপির নেতাদের পশ্চিমবঙ্গের রথযাত্রায় অংশ নেওয়ার বিষয়টিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বাড়ির উঠোনে রথ টেনে বিজেপির নেতারা ভাবছেন তাঁরা বাংলায় রথ টানছেন। বিজেপির নেতারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।