রাজ্যে আজ কড়া নিরাপত্তায় ভোটগণনা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo IANS)

সারা দেশের মতাে আজ এ রাজ্যেও ৪২টি কেন্দ্রের ভােটগণনা। আর এই গণনাকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। বিগত নির্বাচনগুলিতে ভােটগণনার সময় নিরপত্তা ব্যবস্থা যা ছিল, তার থেকে এবার এই ব্যবস্থা দ্বিগুণ করা হয়েছে।

ভােটগণনার নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। যেহেতু এবার গণনায় ইভিএমের পাশাপাশি ভিভিপ্যাটকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেকারণে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হতে সময় লাগবে। তবে ফলাফলের প্রবণতা কোন দিকে যাচ্ছে সেটা এদিন দুপুর বারােটার মধ্যেই বােঝা যাবে।

৪২ টি কেন্দ্রের চূড়ান্ত ফলাফল জানতে ২৪ তারিখ সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, সকাল ছটা নাগাদ নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে স্ট্রং রুম খােলা হবে। এরপর সেখান থেকে গণনা কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে কন্ট্রোল ইউনিট। পােস্টাল ব্যালট গণনার পরে ইভিএমের গণনার কাজ শুরু করবেন ভােটকর্মীরা। প্রতিটি ইভিএম গণনায় সময় লাগতে পারে আধঘন্টা। লটারিতে বেছে নেওয়া হবে প্রতিটি বিধানসভার পাচটি বুথ। গণনাতে বেছে নেওয়া হবে ৫টি বুথের ভিভিপ্যাট।


ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এদিন মােট ৫৮টি গণনাকেন্দ্রের ৩৮৩ টি হল থেকে গণনার কাজ হবে। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে নজরদারি চালানাে হবে সিসিটিভির মাধ্যমে। মােট ১৫৫ জন কাউন্টিং পর্যবেক্ষক গণনা সংক্রান্ত সমস্ত কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকবেন। তা ছাড়া গণনাকেন্দ্রের ১০০ মিটার পর্যন্ত জারি থাকছে ১৪৪ ধারা। মােট ২৫ হাজার কর্মী ভােটগণনার কাজে নিযুক্ত হয়েছেন।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য গণনা কেন্দ্রগুলিতে মােতায়েন থাকছে মােট ৮২ কোম্পানি বাহিনী। কলকাতার জন্য মােতায়েন থাকছে ১০ কােম্পানি। ভােট পরবর্তী হিংসার আশঙ্কা করে তা রুখতে থাকছে ২০০ কোম্পানি বাহিনী। এদিকে নির্বাচন কমিশনের অফিসে ভােটের ফলাফল জানাতে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানাে হয়েছে। প্রতি রাউন্ডের ফলাফল জানা যাবে কমিশনের দফতর থেকে। তা ছাড়া নিউ সুবিধা আপসের মাধ্যমে জানা যাবে ভােটের ফলাফলের গতিপ্রকৃতিও।

এদিকে ইভিএম সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসক দল থেকে শুরু করে বিরােধীরা। বুধবার বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার কমিশনের অফিসে এসে অভিযােগ করেন, তৃণমূল সারারাত স্ট্রং রুম এবং গণনাকেন্দ্রের বাইরে পাহারা দেবে বলে জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা। তিনি আরও বলেন ফলাফলের দিনে আমরা গােলমালের আশঙ্কা করছি। সেটা যাতে কেউ না করতে পারে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও রাখেন তিনি।

অন্যদিকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ভােটকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর পরামর্শ, ভােটের কাজে নিযুক্ত কর্মীদের মধ্যে জয়ের উল্লাস এবং পরাজয়ের হতাশা কোনওটিরই যেন কোনও প্রভাব না পড়ে। সকলকে শান্তি বজায় রাখতে হবে। রাজ্যে যেভাবে ধর্মীয় মেরুকরণ হচ্ছে, সেটা রাজ্যের পক্ষে বিপজ্জনক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও জানান সূর্যবাবু। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, কেউ কোনও প্ররােচনায় পা দেবেন না। ভােটের ফলাফলের পরে অশান্তি রুখতে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য প্রশাসনকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

একইসঙ্গে তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, গােলমাল নিয়ে তাদের আশঙ্কা যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সূর্যবাবু মনে করেন, একজিট পােল যে মতামতই দিক না কেন এবারের লােকসভা নির্বাচনে বিজেপি পরাস্ত হবে। বামেদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। তাঁর কথায় বিগত নির্বাচনগুলিতে কোনও একজিট পােলেরই সমীক্ষা মেলেনি। এবারেও সেই সমীক্ষা ভূল প্রমাণিত হবে বলেও জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।