পুরুলিয়ার জঙ্গলে ফের বাঘের আতঙ্ক

(বাঁ দিকে) খাঁচা পাতছেন বনকর্মীরা।(ডান দিকে) বাঘের পায়ের ছাপ।

ফের বাঘের আতঙ্ক পুরুলিয়ার জঙ্গলে। বেশ কয়েক জায়গায় মিলেছে পায়ের ছাপ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লকের গঙ্গামান্না ও গুঁইয়াপাড়া এলাকায় জঙ্গলে চরতে যাওয়া একাধিক ছাগল গুরুতর জখম হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, জঙ্গলে ফের বাঘ ঢুকেছে। প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলার বনদপ্তর।

এই জঙ্গল ছুট বাঘকে ধরতে রাইকা পাহাড় সংলগ্ন জঙ্গলে খাঁচা পাতা হয়েছে। ‘সম্ভাব্য গতিপথে’ বসানো হয়েছে ২০টি ‘ট্র্যাপ ক্যামেরা’। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে নেকড়া গ্রাম সংলগ্ন বেলডুংরি পাহাড়ের সংলগ্ন এলাকা। রাতভর জেনারেটর চালিয়ে পাহাড়তলির বিভিন্ন এলাকা আলোকিত করা হয়েছে। এলাকাবাসীকে সতর্ক করার জন্য মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে বেরনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ফের প্রথম বাঘের পায়ের ছাপ লক্ষ্য করা যায় পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লকের রাইকা পাহাড় সংলগ্ন নেকড়া গ্রাম লাগোয়া বেলডুংরি পাহাড়তলিতে। তখনই স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারনা হয়, পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে বেলপাহাড়ি জঙ্গলের বাঘ। এরপরই বন দপ্তরের ধারনা হয়, বাঘটি জিনাতের পিছু অনুসরণ করে ওড়িশা থেকে বাংলায় প্রবেশ করেছে। বাঘটিকে খাঁচা বন্দি করতে জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি খাঁচা পাতা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাঘের সম্ভাব্য গতিপথ চিহ্নিত করা হয়েছে। একাধিক ছাগল টোপ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রাইকায় বাঘবন্দি করতে সুন্দরবনের একটি বিশেষজ্ঞ দলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।


উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ওড়িশার সিমলিপালে থাকা বাঘিনি ‘জ়িনাত’ ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার জঙ্গল পেরিয়ে বাঁকুড়ায় প্রবেশ করে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রতি মুহূর্তে বাঘের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। অবশেষে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে ঢোকার পরে গত ২৯ ডিসেম্বর বন দপ্তরের ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে আটক করা হয় সেই বাঘিনিকে। সেই আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে ফের বাংলার জঙ্গলমহলে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই বাঘের অস্তিত্ব সম্পর্কে বনদপ্তর এখনও নিশ্চিত নন। তবু স্থানীয়দের দাবি মেনে এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করেছেন বন বিভাগের কর্মীরা।