বদ্ধঘর থেকে উদ্ধার করা হল তিন ভাই বােনকে। দু’জনের দেহে পচন ধরলেও বেঁচেছিলেন বােন। কিন্তু তাও খুব অল্প সময়ের জন্য। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। একই বাড়িতে তিন ভাইবােনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বাধে। ঘটনার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গােয়েন্দা বিভাগ।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা সাউথ পাের্ট থানায় খবর দেয়। কার্ল মার্কস সরণীতে একটি বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢােকেন পুলিশকর্মীরা। দুই প্রৌঢ় ত্রিলোকী প্রসাদ গুপ্তা এবং ভােলা প্রসাদ গুপ্তার পচন ধরা দেহ উদ্ধার হয়। একই বাড়িতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন বছর ৫৬ এর শান্তি গুপ্তা।
দ্রুত শান্তি গুপ্তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানাে সম্ভব হয়নি শান্তি দেবীকে। বেলা ১২ টা ১০ মিনিট নাগাদ তার মৃত্যু হয়। তিনটি দেহই ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।
অন্যদিকে একই বাড়ি থেকে তিন ভাই-বােনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নামে গােয়েন্দা বিভাগের হােমিসাইড শাখার আধিকারিকরা। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
এক তদন্তকারি আধিকারিক জানান, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপাের্ট অনুযায়ী দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৪ থেকে ৪০ ঘন্টা আগে। আর তাই দেহে পচন ধরা শুরু করেছে। দমবন্ধ হয়েই দ’জনের মৃত্যু হয়। প্রাণবায়ুটুকু থাকলেও বাঁচানাে সম্ভব হয়নি তাদের বােন শান্তি গুপ্তাকে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, বাড়িতে বেশ কিছুদিন বিদ্যুৎ ছিল না। তাই জেনারেটর চালিয়ে আলাের বন্দোবস্ত করেছিলেন তারা। আর তাতেই কাল হয়েছে। ঘরে দরজা জানালাগুলােই ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ। যার ফলে ঘরের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল বিষাক্ত কার্বন মনােক্সাইড গ্যাস। বিষাক্ত গ্যাসই শ্বাসরােধ হয়ে মৃত্যুর মূল কারণ বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান গােয়েন্দাদের। এছাড়া দেহের বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তাই এই ঘটনায় বাইরের কোনও মানুষের হাত নেই বলেই মত তদন্তকারীদের।
জানা গেছে, ভােলাগুপ্ত পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। অন্যদিকে ত্রিলােকী প্রসাদগুপ্ত পূর্ত দফতরের কর্মী। মাস দু’য়েক পরেই তার অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কোন শান্তি দেবী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এবং শয্যাশায়ী ছিলেন। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে পুলিশ।