• facebook
  • twitter
Wednesday, 2 April, 2025

সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অবসরের পথে তিন বর্ষীয়ান নেতা

নতুন নাম নিয়ে নানান জল্পনা

ফাইল চিত্র

বয়সের গেরোয় আটকে গেলেন তিন বাম নেতা। অবসরের পথে বাংলার তিন নেতা-নেত্রী। বড় কোনও মিরাকেল না ঘটলে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে চলেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব ও রেখা গোস্বামী। এই ত্রয়ীর মধ্যে রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র পলিটব্যুরোর সদস্য।

এছাড়া আরও দুই নেতা-নেত্রীও রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। তাঁদের এক জন বর্ধমানের নেত্রী অঞ্জু কর এবং বাঁকুড়ার নেতা অমিয় পাত্র। এবার তাঁদের থাকা বা না থাকা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরমহলে। আলোচনা শুরু হয়েছে এই নেতা-নেত্রীকে যদি রীতি মেনে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে তাঁদের শূন্যপদে কাকে বসানো হতে পারে, তা নিয়ে দলের নানা মুনির নানা মত ভেসে আসছে রাজনৈতিক মহলে।

সিপিএম-এ ভোট না থাকলেও দলে নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা যে কম নেই, তা সম্প্রতি দলের একাধিক জেলা সম্মেলনে স্পষ্ট হয়েছে। কোথাও গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে জেলা কমিটির প্যানেল থেকে গণইস্তফা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, আবার কোথাও সম্মেলনের এক সপ্তাহ পরে ভোটাভুটি হয়েছে। সেই সিপিএম-এ বাংলা থেকে কারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নেবেন, তা নিয়ে জল্পনা নতুন কোনও ঘটনা নয়। সূর্যকান্ত এবং রবীনের মতো নেতাদের জায়গায় দিল্লির শিকে কাদের ভাগ্যে ছিঁড়বে, তা নিয়ে গরমাগরম আলোচনা জমে উঠেছে সিপিএমের অন্দরে। যাঁদের নাম আলোচনায় রয়েছে, জেলা স্তরে তাঁদের অনুগামীদের কৌতূহলের শেষ নেই। অনেকে অতি উৎসাহ দেখিয়ে বাংলা থেকে দিল্লিতে কাজ করতে যাওয়া বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতাদের কাজে গোপন তথ্য সন্ধান করছেন। তাঁরা জিজ্ঞাসা করছেন, ‘দাদার নাম আলোচনায় আছে নাকি?’

তবে সূর্য-রবীন ছাড়াও অমিয় যদি কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়েন বা তিনি ছেড়ে দেন, তা হলে নতুন করে তিন জন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। যার মধ্যে কলকাতার জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের নাম রয়েছে প্রথম দিকে। আবার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ার দৌড়েচা-বাগানের শ্রমিক আন্দোলনের নেতা জিয়াউল আলমের নামও রয়েছে। অমিয় কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরলে তাঁর জায়গায় দু’টি নাম নিয়ে আলোচনা রয়েছে। এক, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক পলাশ দাস এবং দুই, হুগলির জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। দলীয় সূত্রের খবর, পলাশকে জেলা সম্পাদক করা হয়েছে আলিমুদ্দিনের ‘হস্তক্ষেপে’। কারণ উত্তর ২৪ পরগনার অন্য রাজ্য কমিটির সদস্যরা অন্য নামের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২-৬ এপ্রিল। সিপিএমের একটি বড় অংশের ইচ্ছা, মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দেখা। আবার কেউ কেউ চাইছেন, কেরলের মহিলা সমিতির সম্পাদক বা সভাপতি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। তবে সেই মতাবলম্বীদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। অনেকের প্রশ্ন, বাংলার ক্ষেত্রে তা হলে কনীনিকা ঘোষ বা জাহানারা খান কেন তা হতে পারবেন না?

এদিকে ডানকুনি সম্মেলনে মহিলানেত্রী অঞ্জু স্বেচ্ছায় রাজ্য কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাঁর থাকার বয়স রয়েছে। কিন্তু সিপিএমের একটি অংশের বক্তব্য, অঞ্জু ব্যক্তিগতভাবে চান নতুন কাউকে জায়গা করে দিতে। শেষ পর্যন্ত অঞ্জু কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অব্যাহতি নিলে কনীনিকা বা জাহানারার মধ্যে এক জনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। তবে রেখা গোস্বামীর জায়গায় মিনাক্ষীকে নিলে অঞ্জুর জায়গায় জাহানারাকে নেওয়ার সুযোগ কম। কারণ, দু’জনেই পশ্চিম বর্ধমানের। সে দিক থেকে দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন কাশীপুর-বেলগাছিয়ার কনীনিকা। আবার সিপিএমের একটি অংশ একান্ত আলোচনায় বলছেন, মিনাক্ষী কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেলে সুবক্তা সৃজন ভট্টাচার্য কেন বাদ যাবেন? তাঁকেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নিয়ে যাওয়া উচিত।