কলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে দশকের পর দশক ধরে চলা একটি তুঘলকি নিয়ম এবার বন্ধ হতে চলেছে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের জন্য চালু হল অভিন্ন পিএফ বিধি। এতদিন স্কুল শিক্ষকদের বদলির কারণে কোপ পড়ছিল পিএফ-এর সুদে। নানা টালবাহানার শিকার হতেন জাতির মেরুদণ্ড বলে পরিচিত রাজ্যের শিক্ষক সমাজ। অবশেষে এবার সেই সমস্যার স্থায়ী সুরাহা হতে চলেছে। শিক্ষকরা যাতায়াতের সুবিধার কারণে নিজের জেলা বা এলাকায় বদলি নিলে আর পিএফ-এর সুদে টালবাহানা করা হবে না।
সম্প্রতি এব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, পিএফ অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের জমা রাশির ওপর সুদ অব্যাহত রাখতে হবে। ‘আপটুডেট’ রাখতে হবে তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড। এমনটি ট্রেজারি বদল হলেও এই নির্দেশ কার্যকরী থাকবে। অর্থাৎ নতুন স্কুলে বদলি হলেও তাঁদের পিএফ-এর সুদ কখনও বন্ধ হবে না।
উল্লেখ্য, এতদিন প্রথা ছিল বিভিন্ন জেলাতে সর্বোচ্চ ছয় মাস সুদ দেওয়া হতো। কিন্তু বাকি সময়ের সুদ শিক্ষকদের দেওয়া হতো না। শিক্ষকরা নতুন স্কুলে বদলি হয়ে সেখানে শিক্ষকতা শুরু করার পর কেটে যেত বছরের পর বছর। অথচ সঙ্গে সঙ্গে পিএফ অ্যাকাউন্ট চালু হতো না। কোথাও কোথাও দুই বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেত তাঁদের ভবিষ্যনিধি তহবিল চালু হতে। এই দীর্ঘ দিনে তাঁদের জমা রাশির সুদ ক্ষতিগ্রস্ত হতো।
এই নিয়ে শিক্ষকদের একটি সংগঠন অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। দীর্ঘ বাম জমানাতেও এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেনি তৎকালীন শিক্ষা দপ্তর। এবিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে, এটা এতদিন জেলার শিক্ষাকর্তাদের মর্জিমতো চলছিল। কেউ কেউ যে আপটুডেট ইন্টারেস্ট দিচ্ছিলেন না এমন নয়। তবে এরকম একটি অভিন্ন নির্দেশ আসারও প্রয়োজন ছিল।