• facebook
  • twitter
Monday, 6 January, 2025

সাংগঠনিক রদবদল হবেই: অভিষেক

সাংসদের প্রশ্নবাণ, 'সিএএ আইন পাশ করানো হয়েছে নাগরিকত্ব প্রদানে, তাহলে বাংলাদেশের অত্যাচারিত হিন্দুদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না কেন কেন্দ্র? নির্বাচন নেই বলে?'

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।

ঠিক সময়ে দলে সাংগঠনিক রদবদল হবেই, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিজ সংসদীয় কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি ‘সেবাশ্রয়’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক ফের সাংগঠনিক রদবদলের বিষয়ে মুখ খোলেন। তাছাড়াও এদিন অনুপ্রবেশ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও কেন্দ্রের দিকে প্রশ্নবাণ ছুঁড়েছেন তিনি। সাংগঠনিক রদবদলের ভিত্তি যোগ্যতা, আর যোগ্যতার মাপকাঠি ভোটের ফলই।

এ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘সাংগঠনিক রদবদল হবেই। যাঁরা দলের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের চিন্তা করতে হবে না। গাছের পরিচয় তার ফলে। আমি কত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ, তা ফলাফল দেখলেই বোঝা যাবে।’ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তিনি ইতিমধ্যেই রদবদলের বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রস্তাব দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছেন। এই বিষয়ে দলনেত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি। অভিষেক বলেন, ‘পর পর ভোট এবং উৎসব ছিল। ঠিক সময়েই হবে সাংগঠনিক রদবদল।’

সম্প্রতি বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার হচ্ছে জঙ্গি। বিরোধীরা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে রাজ্য সরকারকেই। যদিও এ প্রসঙ্গে শাহী মন্ত্রককে নিশানা করে অভিষেকের বক্তব্য, ‘বাংলাকে অশান্ত করার জন্য জঙ্গি ঢুকিয়েছে বিএসএফ। বিজেপিশাসিত ত্রিপুরা, অসমে তাহলে জঙ্গি ধরা পড়ছে কেন? বাংলায় গরু আসে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, বিহার হয়ে। সবার আগে যোগী আদিত্যনাথ তারপর অমিত শাহের জেলে যাওয়া উচিৎ। বাংলা মানুষের কাছে উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ধর্মনিরপেক্ষতার হাব হয়ে উঠেছে, জঙ্গি নয়।’

লোকসভা ভোট-পরবর্তী পর্যায়ে নানা ঘটনায় তৃণমূলের মধ্যে নেতৃত্বের সমীকরণের প্রশ্নে আলোচনা রয়েছে। দলের ‘অভিষেক-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিতদের বাদ পড়া নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল শাসকদলের অন্দরে। যদিও অভিষেকের কথায়, ‘আমার কাজ দলে দলে ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো। আমরা সহযোদ্ধা। দল যা ঠিক মনে করেছে, তাই করেছে।’ অভিষেকের প্রায় সওয়া এক ঘণ্টার বক্তব্যে এসেছে আরজি কর থেকে সন্দেশখালি প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা বলেছিলেন আরজি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রান্ত করেছেন! কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘন্টায় যা করেছে সিবিআই ৫ মাসেও তা করতে পারেনি। সন্দেশখালি নিয়ে যত কুৎসা হয়েছে জয়ের ব্যবধান ততো বেড়েছে।

সন্দেশখালির সেই অভিযুক্ত মন্ডল সভাপতি কোথায়? সত্য সামনে আসার ভয়ে কী তাঁকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে?’ আরজি কর-কাণ্ডে শাসকদলের অন্দরে তৈরি হওয়া জল্পনা প্রসঙ্গেও তাঁর সাফ যুক্তি, ‘আমরা ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এমন নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামাই কাম্য। রাষ্ট্রপতি অপরাজিতা বিলে অনুমোদন না দিলে প্রাইভেট মেম্বার বিল আনবো।’ মণিপুর, বাংলাদেশ, আবাস যোজনা-সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রকে দফায় দফায় আক্রমণ অভিষেকের। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চুপ কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সাংসদের প্রশ্নবাণ, ‘সিএএ আইন পাশ করানো হয়েছে নাগরিকত্ব প্রদানে, তাহলে বাংলাদেশের অত্যাচারিত হিন্দুদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না কেন কেন্দ্র? নির্বাচন নেই বলে?’ আবাস নিয়ে মোদী সরকারকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারেনি। প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র দিয়েছে, প্রমাণ করতে পারলে আমি ক্ষমা চাইব।’ বাংলা জুড়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদেরই উপর আক্রমণ হওয়ার প্রসঙ্গে শান্তির বার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের উচিৎ রাজনৈতিক রং না দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা। প্রশাসনের আরও কঠোর হতে হবে।’