রাজনৈতিক অসৌজন্যের ছাপ পড়ল

সোমবার ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর শেয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত যাত্রা শুরু করল রাজনৈতিক অসৌজন্যের ছাপ গায়ে মেখে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী এমনকী মন্ত্রী এবং রাজ্যের কোনও জনপ্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়াই এই যাত্রাপথের সূচনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

উদ্বোধনী মঞ্চেও এদিন স্মৃতি ইরানি আগাগোড়াই প্রধানমন্ত্রীর গুণগান করে যান। কিন্তু একবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উচ্চারণ করেননি।


অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই এই ইস্টওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছিলেন।

এই মেট্রো প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণও তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে।

অন্যদিকে ২০০৯ সালে এই ইস্ট ওয়েস্ট ।মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।

তাঁদেরও কারও নামই একবারও উচ্চারিত হয়নি সোমবার মেট্রোর নতুন যাত্রাপথের সূচনায়। মেট্রোর এই নতুন যাত্রাপথের সূচনাতেই উদ্বোধন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বেধে যায়।

অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্রে কোথাও মুখ্যমন্ত্রী কিংবা মেয়রের নাম ছিল না। যদিও রবিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে একটি নিমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নাম কার্ডে না দিয়ে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো অপমান। এইভাবে বাংলার দশকোটি মানুষকে অপমান করেছে কেন্দ্র।

সাংসদ সৌগত রায়ও বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত সূচি আছে জেনেই ইচ্ছাকৃতভাবে সেই এই মেট্রো রেলের অনুষ্ঠান নির্ধারিত করেছে কেন্দ্র।

সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রেল নিয়ে আলাদা অনুভূতি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

নাম না দিয়ে তাঁকে এভাবে আমন্ত্রণ জানানো ঠিক হয়নি এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

তিনি সেদিন বলেন, বাড়িতে কার্ড ফেলে দিয়ে এলেই নিমন্ত্রণ হয় না। কুৎসিত রাজনীতি করছে বিজেপি।

এই বিতর্কের প্রতিবাদ হিসেবে এদিন আমন্ত্রণপত্রে নাম থাকা সাংসদ, বিধায়কদের কেউই এদিন হাজির ছিলেন না ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর এই নয়া যাত্রাপথের সূচনায়।

অন্যদিকে এদিন শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধনের সময়ে আমেঠির সাংসদ স্মৃতি ইরানীর পাশেই দেখা গেল লকেট বিরোধী বিজেপি নেতা সুবীর নাগকে।

সোমবার মেট্রোর নবনির্মিত চলমান সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ে বিতর্কিত নেতা সুবীর নাগ সবসময়ই রইলেন স্মৃতির পাশে।

এই ছবি ঘিরে বিজেপিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। চুঁচুড়ায় লকেটের হারের নেপথ্যে সুবীরের বিরদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উঠেছিল।

লকেটের দাবি ছিল, একুশের ভোটের পরেই সুবীরের সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সেই সুবীর নাগকে এদিন স্মৃতি ইরানীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হতে দেখে জল্পনা চলছে বিজেপিরই অন্দরমহলে।