শিক্ষকের চাকরি খোয়া যেতেই বেসামাল দশা পুরুলিয়ায় রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আড়রা জুনিয়র হাই স্কুলের। এই হাই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন মাত্র একজনই। সুপ্রিম রায়ে সে সংখ্যাটাও শূন্য হয়ে গেল। সদ্য চাকরি হারানো ওই শিক্ষকের নাম অভিষেক প্রসাদ। তিনি বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহির বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের যে গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছে, অভিষেক প্রসাদও সেই প্যানেলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। যার ফলে তিনিও অন্যদের মতো চাকরি হারিয়েছেন। এদিকে স্কুলের একমাত্র শিক্ষকের চাকরি খোয়া যাওয়ায় চিন্তিত ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি। চিন্তায় স্কুলের পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকরাও।
এই মুহূর্তে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪৪। এতদিন এই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক বলতে ছিলেন একজনই। তাঁকে সাহায্য করতেন দুইজন গেস্ট টিচার। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। স্থায়ী শিক্ষকই নিজের পদ খুঁইয়েছেন। এখন দুইজন গেস্ট টিচার দিয়ে কিভাবে চলবে স্কুল? পড়ুয়াদের পড়াশোনারই বা কী হবে? যদিও পুরুলিয়ার জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান, স্কুলে যে গেস্ট টিচাররা রয়েছেন তাঁরাই আপাতত স্কুলের দায়িত্ব নেবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও গেস্ট টিচার নিয়োগ করা হবে।
জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, ডিআই অফিসের তত্ত্বাবধানে গেস্ট টিচারদের বেতন দেওয়া হয়। মাসিক ৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়। তবে সেক্ষেত্রেও নিয়োগে কিছু বিধি রয়েছে। অন্যদিকে, চাকরি হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন আড়রা জুনিয়র হাই স্কুলের ওই শিক্ষক। সূত্রের খবর, দিন ৪-৫ আগেই তিনি তাঁর বাবাকে হারিয়েছেন। প্রায় ৬ মাস আগে তাঁর মায়ের শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ ক্যান্সার। চিকিৎসা চলছে তাঁর। এমতাবস্থায় চাকরি খুইয়ে কুল কিনারা হারিয়েছেন তিনি।
একেই বাংলার সরকারি স্কুলগুলির অবস্থা বেহাল। তাতে নিয়োগের দাবিতে পথে নেমেছেন অগুনতি শিক্ষক। তার মধ্যে সুপ্রিম নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক চাকরিহারা হয়েছেন। এমতাবস্থায় স্কুলগুলোর পঠন পাঠনের অবস্থা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।