সংরক্ষণের সুযোগ নেই, চাষিদের লোকসান কমাতে সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ কেনা শুরু পূর্ব বর্ধমানে

আমিনুর রহমান, বর্ধমান , ১০ মার্চ:  আলুতে না হলেও রাজ্যের কৃষি প্রধান পূর্ব বর্ধমান জেলায় পেঁয়াজের ফলন খুব একটা ভালো নয়। আবার এখনও সংরক্ষণ এর কোন ব্যবস্থা নেই। আর তাই চাষিরা যাতে এবছর পেঁয়াজ তোলার পর সঠিক দাম পেতে পারেন তার জন্য একেবারে শুরতেই সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলো। চাষিদের কাছে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ কেনা শুরু হলো কালনা মহকুমার বিভিন্ন অঞ্চলে। যে হেতু শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় কালনা সহ আশেপাশের এলাকায় তাই প্রথম সুযোগ সেই অঞ্চলের চাষিদেরই দেওয়া হলো বলে জানানো হয়। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের কৃষি বিপণন দপ্তরের পক্ষ থেকে। এই ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও চাষিরা স্বস্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

রাজ্যের খাদ্য ভান্ডার পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে ইতিমধ্যেই জমি থেকে পেঁয়াজ তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এমনিতেই ফলন ভালো না হওয়ায় হতাশ বেশিরভাগ চাষি। আর তার পরেই ফসল তোলার পর সঠিক ও লাভজনক দাম পাবেন কিনা তা নিয়ে প্রথম থেকেই সংশয়ে চাষিরা। সংশয় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন জেলা তথা মহকুমা কৃষি বিপনন দপ্তরের আধিকারিকরা। তারা চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে বর্ধমানের কালনা মহকুমাতে পেঁয়াজ কেনা শুরু হলো সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্যোগে।

যেহেতু কালনাতে এ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তাই এখানেই পেঁয়াজ কেনা শুরু হলো হলো। এখানকার বিশেষ জাত ” সুখসাগর ” এর কদর শুধু মাত্র এজেলা বা আশপাশের এলাকাতেই নয়, সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেই চাহিদা রয়েছে। তাই চাষিদের দাবি জমি থেকে পেঁয়াজ তোলার পর কিছুদিন রেখে বিক্রি করলে চাহিদার তুলনায় দামও ভালো পাওয়া সম্ভব। কিন্তু পেঁয়াজ সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা সেই অর্থে নেই এ জেলায়। তাই দুঃচিন্তা কমাতে কৃষি বিপণন দপ্তরের আধিকারিকরা যোগাযোগ করে পেঁয়াজ কেনা শুরু করলেন। এদিকে চাষিদের এই স্থায়ী সমস্যা সংরক্ষণ এর সমাধানের দাবি তোলা হয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে।অল বেঙ্গল ট্রেড এন্ড ট্রের্ডাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি বিশ্বেশ্বর চৌধুরী বলেন আমরা চাই কৃষি প্রধান এই জেলায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ কেন্দ্র খোলা হোক সরকারি উদ্যোগে। একই সঙ্গে রাজ্যের প্রতি জেলায় সরকারের তরফে পেঁয়াজ এবং আলু দুটি ফসলই নায্য মূল্যে কেনার ব্যবস্থা করতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।


এবার প্রথম পর্যায়ে পাঁচ জন চাষির কাছে প্রায় দু টনের মতো পেঁয়াজ কেনা হলো। জানা গেছে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পেঁয়াজ কিনে তা বিক্রি করা হবে রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা স্টলে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি বিপনন দপ্তরের এক আধিকারিক প্রবীর কুমার বিশ্বাস যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন। জানা গেছে এবার থেকে প্রতিদিন চাষিদের কাছে বেশি বেশি করে পেঁয়াজ কেনার কাজ চলবে। চাষিদের কাছে যে পেঁয়াজ কেনা হচ্ছে তার সরকারি সহায়ক মূল্য ধার্য হয়েছে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা কেজি দরে। এ মুহূর্তে সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে সরকারি সুফল বাংলা স্টল আছে, পেঁয়াজ সংগ্রহ করে জেলা গুলোর ওই সব স্টলে বিক্রি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।