• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বড়লােক হওয়ার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত সীমান্তের বেকার যুবকরা

নতুন এক ছলনায় অল্পদিনে বড়লােক করে দেওয়ার প্রলােভন দেখিয়ে প্রান্তিক এলাকায় থাকা মানুষগুলির সর্বস্ব হরণ করে সর্বস্বান্ত করছে এক চক্র। সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী চাকরিজীবী ও বেকার যুবকদের প্রলােভন ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে তারা।

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি (Photo: iStock)

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পাঁচটি মহকুমার মধ্যে অন্যতম প্রান্তিক মহকুমা বসিরহাট। এই মহকুমার সংলগ্ন এলাকাই হল প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সীমান্ত। এই সীমান্তকে ব্যবহার করে অপরাধমূলক বিভিন্ন কাজের অভিযােগ ওঠে প্রায়শই। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করে অপরাধমূলক কাজ কর্ম করার পরে ফের তারকাটা পেড়িয়ে ফিরে যাওয়ারও অভিযােগ রয়েছে ভুরিভুরি। এছাড়াও পাচারকারীদের কাজে বাধা দিলে তাদের হাতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও রয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় হওয়ায় পাচার কাজের রমরমা আপাতত কিছুটা কম।

তবে নতুন এক ছলনায় অল্পদিনে বড়লােক করে দেওয়ার প্রলােভন দেখিয়ে প্রান্তিক এলাকায় থাকা মানুষগুলির সর্বস্ব হরণ করে সর্বস্বান্ত করছে এক চক্র। সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী চাকরিজীবী ও বেকার যুবকদের প্রলােভন ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এই জাল ব্যবসার মূল প্রলােভন হল যে টাকা দেওয়া হবে তা কয়েকদিনের মধ্যেই করে দেওয়া হবে দ্বিগুণ। কিন্তু সেটি প্রায় জাল টাকা তৈরির মতাে পদ্ধতি বলে জানাচ্ছেন প্রতারিতরা। তাঁরা জানান, সীমান্তবর্তী এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিকেই মূলত বেছে নেওয়া হয় এই কাজের জন্য। চায়ের দোকানে বা বাজারে ঘাঁটি বাঁধে তারা। সেখানে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলার অছিলায় বন্ধুত্ব করে এরপর স্বল্প দিনে ওই সমস্ত যুবকদের বড়লােক হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। তাদের কাছ থেকে টাকা হাতানাের জন্য বড়লােক হওয়া যাবে এই বিশ্বাস জাগাতে নিয়ে আসে তাদের সেই বাড়িতে। ৫০০ বা দু’হাজার টাকার পরিমাপের কাগজ বের করে একটি দামি কেমিকেল ঢেলে সেই সাদা কাগজটিকে টাকায় রূপান্তরিত করার পদ্ধতি দেখানাে হয়।

এরপর বেশ কয়েকটি এরূপ টাকা তৈরি করে সেই সমস্ত যুবকদের যে কোনও একটি টাকা তুলে তা ব্যাঙ্কে নিয়ে জমা দেওয়ার কথা বলা হয় যাতে তাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস হয়। এরই মাঝে হাতের খেলায় যে নকল নােটটি যুবক নেবে বলে ঠিক করে তা বদলে দেওয়া হত। ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ায় এবং তা জমা হয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস জন্মায় তাঁদের মধ্যে। এরপরই দ্বিগুণ টাকা পাওয়ার লােভে কেউ বসতবাড়ি, চাষের জমি আবার কেউ ব্যাঙ্কে জমানাে টাকা তুলে দেয় ওই চক্রের হাতে। সেই টাকা হাতে পাওয়ার পর গােপন আস্তানায় ওই বাড়িতে বসে ওই কেমিকেল দিয়ে টাকা তৈরি করার কাজ করা হত। কিন্তু ওই কেমিকেলের মধ্যে কোনও পােকা বা আরশােলা ফেলে দিয়ে সম্পূর্ণ পদ্ধতি নষ্ট হয়ে গেছে একথা বলে ফের কেমিকেল এবং সাদা ওই বিশেষ কাগজ কেনার জন্য টাকা নেওয়া হত। এইভাবে মােটা অঙ্কের টাকা হাতানাের পরই কিছুদিন পরে ওই এলাকা থেকে চম্পট দেয় তারা।

কয়েকমাস আগেই দেগঙ্গা থানার অন্তর্গত বেড়াচাঁপা এলাকার কয়েকজন যুবক কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে এই চক্রের হাতে পড়ে। যদিও যে সকল ব্যক্তির হাতে টাকা দিয়েছেন তাদের নাম বা ঠিকানা কিছু বলতে পারেনি তারা। বসিরহাট থানাতেও তারা এবিষয়ে অভিযােগ জানিয়েছেন কয়েকমাস আগে বলেও জানায়। এই চক্রের হাতে পড়ে সর্বস্ব খােয়াচ্ছে বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা এবিষয়ে সতর্ক করছেন মানুষকে এবং ওই জাল চক্রকে ধরার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান এক পুলিশ কর্তা।

পড়ুন । ‘জমির আল’, ‘উঠোন’ ভাড়া দিয়ে সীমান্তে রমরমিয়ে চলছে পাচার কাজ

পড়ুন । অচেনা মুখ দেখলেই মুখে কুলুপ সীমান্ত বাসীর